আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। নিহতদের মাঝে ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাও আছে।
সোমবার রাত থেকে আলজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বনাঞ্চলগুলোতে কয়েক ডজন পৃথক দাবানল শুরু হয়, এতে রাজধানী আলজিয়ার্সের পূর্বাঞ্চলীয় পর্বতময় কাবিলি অঞ্চল ঘন ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করার জন্য সৈন্যদের সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল, তার মধ্যেই মঙ্গলবার ওই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে।
আগুন লাগানোর জন্য অগ্নিসংযোগকারীদের দায়ী করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামেল বেলজুউদ, তবে অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি তিনি।
বেলজুউদ বলেন, বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০টি দাবানল একযোগে শুরু হওয়ার পেছনে কেবল অপরাধীদের হাতই থাকতে পারে।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষক বলেছিল, তাপদাহের কারণে তুরস্ক ও গ্রিসের বনগুলো বিশাল আগুনে ছেয়ে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল একটি দাবানলের হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
কাবিলির তাইজি ওজৌ অঞ্চলের বাসিন্দারা গাছের ডালপালা ব্যবহার করে পাল্টা আগুন লাগিয়ে বা প্লাস্টিকের কন্টেইনারে করে পানি এনে ছিটিয়ে মরিয়াভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
কাবিলির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সৈন্যদের মৃত্যু হয়েছে পৃথক এলাকায়, তাদের মধ্যে কয়েকজন আগুন নেভাতে গিয়ে এবং বাকিরা ছড়িয়ে পড়া আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে মারা যান।
আরও অনেক সৈন্য আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু বাড়ি পুড়ে গেছে, পরিবারগুলো হোটেল, যুব হোস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকাগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ঘন ধোঁয়ার কারণে দৃষ্টিসীমা আচ্ছন্ন হয়ে থাকায় দমকল কর্মীদেরও সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
অ্যাজাজগা গ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে একটি হোটেলে পালিয়ে আসা মোহাম্মদ কাসি বলেন, ভয়াবহ একটা রাত ছিল। আমার বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে কথা বলার সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আয়মান বেন আব্দুররহমান জানিয়েছেন, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে, এদের মধ্যে ২৫ জন সামরিক বাহিনীর সদস্য।
দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করতে ও বিমান ভাড়া করতে বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে কথাবার্তা অনেকদূর এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দমকল কর্মীরা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে হতাহত এড়ানোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেলজুউদ জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাত থেকে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির অন্তত ১৬টি প্রদেশে ছোট ছোট দাবানল বনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সময় জার্নাল/আরইউ