সময় জার্নাল ডেস্ক : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকিং খাতের ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও সেবা। দেশের বেসরকারি খাতের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এখানেও নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। ঘরে বসেই ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা যায়। একাউন্টে লেনদেন করা যায় বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে। এ ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করা যায় বিশ্বের যেকোন দেশে। নগদ টাকা জমা দিতেও এখন আর যেতে হয় না ব্যাংকে।
ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন একটি স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ। যেকোন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট, কার্ড ও এমক্যাশ নম্বরে সরাসরি টাকা পাঠানো যায় সেলফিন থেকে। টাকা নেয়া যায় বিকাশ, নগদ ও রকেট-এও। আর যেকোন ব্যাংকের ভিসা বা মাস্টারকার্ড, ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও এমক্যাশ থেকে টাকা আনা যায় সেলফিনে। এতে রয়েছে ভিসা (ঠওঝঅ) সুবিধা সংযুক্ত একটি ভার্চুয়াল ডেবিট কার্ড। এর মাধ্যমে দেশী- বিদেশী যেকোন সাইটে ই-কমার্সের পেমেন্ট দেয়া যায়। সেলফিনের মাধ্যমে নিজে নিজে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস, স্টুডেন্ট, ডিপিএসজাতীয় হিসাব ও মাসিক মুনাফাভিত্তিক জমা হিসাব খোলা যায়। বিশ্বের যেকোন দেশ থেকে তাৎক্ষণিক রেমিট্যান্স গ্রহণ করা যায় সেলফিনে। ফ্রিল্যান্সার কর্মীরাও যেকোন দেশ থেকে সরাসরি পেমেন্ট নিতে পারেন। সেলফিনের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ করা যায়, যেকোন ব্যাংকের ভিসা/মাস্টারকার্ডের বিল দেয়া যায়, চুক্তিবদ্ধ স্কুল-কলেজের ফি প্রদান করা যায়। পরিচিত সেলফিন ব্যবহারকারীর কাছে টাকা চেয়ে রিকোয়েস্ট মানি করা যায়। তাৎক্ষণিক আর্থিক প্রয়োজন পূরণে এ যেন এক ম্যাজিক। ইসলামী ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্ট আউটলেট থেকে ক্যাশ আউট করা যায় কার্ড ছাড়াই। যেকেউ বাংলাদেশ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে স্মার্টফোনে খুলতে পারেন সেলফিন অ্যাকাউন্ট।
ইসলামী ব্যাংকের আরেকটি জনপ্রিয় ডিজিটাল সেবা হচ্ছে আই-ব্যাংকিং বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং। এর মাধ্যমে গ্রাহক বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন। একাউন্টের ব্যালেন্স জানা, স্টেটমেন্ট গ্রহণ, বিনিয়োগ স্টেটমেন্ট ও আউটস্ট্যান্ডিং পজিশন নেয়া এবং এক্সপোর্ট/ইমপোর্ট বিলের কস্ট শিট নেয়া যায়। যেকোন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে দিনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত তাৎক্ষণিক ফান্ড ট্রান্সফার করা যায়। আই- ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ই-কমার্সের পেমেন্ট প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, অনলাইনে ইউটিলিটি বিল প্রদান করা যায়। সহজে আইব্যাংকিং পরিচালনার জন্য রয়েছে আইস্মার্ট নামে মোবাইল অ্যাপ।
ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে ডুয়েল কারেন্সি ডেবিট কার্ড। এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোন এটিএম থেকে টাকা বা বিদেশী মুদ্রা উত্তোলন করা যায়। দেশ/বিদেশে পিওএস মেশিনের মাধ্যমে কেনাকাটা ও ই-কমার্স ট্রানজেকশন করা যায়।
এ ব্যাংকের আরেকটি অনন্য সার্ভিস হচ্ছে ক্যাশ-বাই-কোড যার মাধ্যমে প্রাপকের ব্যাংক হিসাব ছাড়াই উত্তোলনযোগ্য নগদ টাকা পাঠানো যায়। আইব্যাংকিং, সেলফিন বা এটিএম মেশিন থেকে ক্যাশ-বাই-কোড ইস্যু করা যায়।
ইসলামী ব্যাংকের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস হচ্ছে এমক্যাশ। মোবাইল রিচার্জ, ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লেনদেন, পার্সন টু পার্সন এবং পার্সন টু গভর্নমেন্ট ফান্ড ট্রান্সফার, কর্পোরেট স্যালারি প্রদান, মার্চেন্ট পেমেন্ট, চুক্তিবদ্ধ স্কুল- কলেজের ফি প্রদান করা যায় এমক্যাশে। এমক্যাশ এজেন্ট, ইসলামী ব্যাংকের এটিএম/সিআরএম, এজেন্ট আউটলেট ও শাখা থেকে ক্যাশ-ইন ও ক্যাশ-আউট করা যায়।
সারাদেশে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের দেড় হাজার এটিএম ও ৪০০ এর বেশি সিআরএম-এর শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। সিআরএম মেশিনে উত্তোলনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক নগদ টাকা জমা করা যায়। ইসলামী ব্যাংকের এটিএম/সিআরএম মেশিন থেকে এ ছাড়াও যেকোন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাৎক্ষণিক ফান্ড ট্রান্সফার, কার্ড ছাড়াই নগদ গ্রহণ ও খিদমাহ কার্ডের বিল প্রদান করা যায়।
ইসলামী ব্যাংকের সর্বশেষ সংযোজন হোয়াটস অ্যাপ সেবা পাওয়া যায় +৮৮০১৩১৩০১৬২৫৯ নম্বরে বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে। গ্রাহকের হিসাবে প্রদত্ত যোগাযোগ নম্বর থেকে উক্ত নম্বরে টেক্সট করে অ্যাকাউন্ট ও কার্ডের ব্যালেন্স, মিনি স্টেটমেন্ট, ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধির সাথে বার্তালাপ (চ্যাটিং), ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্নোত্তরসহ
বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক মেসেঞ্জার সাইটেও চ্যাটবটের মাধ্যমে এই সেবাগুলো পাওয়া যাবে। আধুনিক জীবনযাত্রার ধারণা নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের আছে ‘খিদমাহ’ নামে শরী‘আহসম্মত ক্রেডিট কার্ড। দেশ-বিদেশে পিওএস মেশিনে বিল পরিশোধযোগ্য কেনাকাটা, হোটেল ও হসপিটালের বিল পরিশোধ, বাস/ট্রেন/প্লেনের টিকেট কাটায় খিদমাহ কার্ড ব্যবহারযোগ্য। খিদমাহ কার্ডে কেনাকাটায় রয়েছে ইএমআই সুবিধা।
প্রত্যেক শাখা, এজেন্ট আউটলেট এবং প্রায় ৩,৩০০ মার্চেন্ট পয়েন্টে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের পিওএস (চঙঝ) টার্মিনাল। ভিসা/মাস্টারকার্ড সংযুক্ত যেকোন ব্যাংকের কার্ড
এতে লেনদেনযোগ্য। এ ছাড়া ব্রাঞ্চ পিওএস থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করা যায়। ভ্রমণে বিদেশী মুদ্রার ঝক্কি এড়াতে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড। এতে রয়েছে ১২,০০০ ডলার পর্যন্ত লেনদেন সুবিধা। বিশ্বের যেকোন স্থানে নগদ উত্তোলন ও কেনাকাটায় এটা ব্যবহারযোগ্য। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ট্রাভেল কার্ড সেবা নেয়া যায়। ব্যাংকের যেকোন শাখা বা অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে কার্ডে ব্যালান্স লোড করা যায়। স্বচ্ছন্দে হজ পালনের সুবিধা নিয়ে এসেছে ইসলামী ব্যাংকের হজ প্রিপেইড কার্ড। এতে রয়েছে সৌদি আরবে এটিএম থেকে রিয়াল উত্তোলন ও লেনদেনে বিল পরিশোধের সুবিধা। হজ ও উমরাহ পালনের ক্ষেত্রে এই কার্ড ব্যবহার করা যায়। হজ এজেন্সিও এই কার্ডের সেবা গ্রহণ করতে পারে।
গ্রাহকদের জন্য ২৪ ঘণ্টা তথ্য ও সরাসরি সহায়তা নিয়ে আছে ইসলামী ব্যাংকের কন্ট্যাক্ট সেন্টার। ১৬২৫৯ এবং +৮৮০২৮৩৩১০৯০ এই দুটি নম্বরে রয়েছে কন্ট্যাক্ট সেন্টারের সেবা। ব্যালান্স অনুসন্ধান, বিভিন্ন ব্যাংকিং তথ্য, কার্ড বন্ধ ও পুনরায় সচল করা, সেলফিন অ্যাকাউন্ট সচল করা, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও কার্ডের গ্রিন পিন সেটকরণে সহায়তা, স্টপ পেমেন্ট, চেক বইয়ের চাহিদা প্রদান, স্ট্যান্ডিং ইন্সট্রাকশন, ই-কমার্র্স লেনদেনসহ যাবতীয় সহায়তা পাওয়া যায় কন্ট্যাক্ট সেন্টারে।
ইসলামী ব্যাংকের রেজিস্টার্ড হিসাবগ্রাহকদের জন্য রয়েছে এসএমএস সার্ভিস। গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ২৬৯৬৯ এবং অন্য অপারেটরের গ্রাহকরা ৬৯৬৯ নম্বরে নির্ধারিত
ফরম্যাটে এসএমএস পাঠিয়ে ব্যালান্স, মিনি স্টেটমেন্ট, ট্রানজেকশন নোটিফিকেশন ও ব্যাংকিং তথ্যসহ বিভিন্ন পুশ-পুল এসএমএস পেতে পারেন। ইসলামী ব্যাংকের এ রকম অনেক সেবার ফলে জীবন এখন আরো সহজ ও স্বচ্ছন্দ হয়েছে। গতি পেয়েছে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি। এগিয়ে চলেছে দেশের অর্থনীতি।
সময় জার্নাল/এমআই