নিজস্ব প্রতিবেদক।সময় জার্নাল : অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’ বারবার পণ্য ডেলিভারির তারিখ দিয়েও সময় মতো গ্রাহককে পণ্য বুঝিয়ে দিতে না পারায় গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটি ঘেরাও করে সোমবার (১৬ আগস্ট)। এদিন তৃতীয় মেয়াদে পণ্য ডেলিভারির তারিখ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানে গিয়েও মালিক পক্ষের কাউকে না পাওয়ায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। তারা কোনও উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ছুটে আসেন প্রতিষ্ঠানটির ছয় মাস মেয়াদে (জানুয়ারি ২০২১-জুলাই ২০২১) ব্র্যান্ড-অ্যাম্বাসেডর থাকা বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বাসার দিকে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় দুই হাজারেরও বেশি গ্রাহক জড়ো হয় মিরপুরে মাশরাফীর বাসার সামনে। এই সময় বিক্ষুব্ধ জনতাকে থামাতে শেষ পর্যন্ত পুলিশের শরণাপন্ন হতে হয় তাকে।
তার আগে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে নিজে থেকেই কথা বলতে আসেন মাশরাফী। ই-অরেঞ্জ এর সঙ্গে ছয় মাসের চুক্তিপত্রে এমন কোনও কিছু উল্লেখ ছিল না যে, গ্রাহকদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন তিনি। এরপরও তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন, ব্র্যান্ড-অ্যাম্বাসেডর না থাকলেও শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবেন গ্রাহকরা যেন পণ্য ও টাকা ফেরত পান।
গণমাধ্যমকে মাশরাফী বলেন, “দেখেন কোনও কোম্পানির সাথেই এমন কোনও চুক্তি হয় না ব্র্যান্ড-অ্যাম্বাসেডরদের। আপনাকে বুঝতে হবে আমরা যখন কোনও কোম্পানির সঙ্গে এক মাস বা এক বছরের জন্য চুক্তি করি তখন দুইটা বিজ্ঞাপন থাকে, দুইটা প্রোমো থাকে, একটা সাইনিং ডেট থাকে, আর এক্সট্রা যদি ওদের কোনও কিছু থাকে ওইটা করে দেই। এরজন্য ৬ বা ৭দিন সময় উল্লেখ থাকে এর বেশি কিছু না। আর তিন মাস, ছয় মাস বা অগ্রিম কত টাকা সেটা উল্লেখ থাকে। পেমেন্টের বাইরে কোনও কিছু উল্লেখ থাকে না। এর বাইরে যদি কোনও দায় দায়িত্ব থেকেই থাকে, তাহলে আমি সবচেয়ে বোকা।”
সোমবার সকাল থেকেই অনেক ফোন আসতে থাকে মাশরাফীর কাছে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিজেদের অর্থ বিনিয়োগ করে না পাওয়ার দুশ্চিন্তায়।
এছাড়া জানা গেছে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায়ও পরিবর্তন এসেছে। মাশরাফী বলেন, “এখানে যারা এসেছে তারা বলল যে মালিকানা বদল হয়েছে। এখানে তো আমার কিছু করার নাই। এতগুলা মানুষ এখানে এসেছে, তাই আমি মানবিক জায়গা থেকে তাদের সবার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। আমি না বললেও পারতাম। আমি যখন দুপুরে ফোন পাই অনেকের তখন ওদের অফিসে গেলাম যদি কিছু করা যায়। তো ওইটাই, আমি অলরেডি এটেম্পট নিয়েছি, উনারা যেটা বলেছে এবং এখানে যারা এসেছে তারাও চাইছে মামলা করতে। সেটার ব্যবস্থাও আমি করে দিয়েছি। এখানে যারা এসেছে তাদের বাইরেও তো অনেক মানুষ আছে। সবার হয়েই আমি ফাইট করব। আমি প্রতিষ্ঠানের সিইও-কে অনেকবার অনুরোধ করেছি ১৯ তারিখ থেকে যেন ডেলিভারিগুলো দিয়ে দেয়।”
মাশরাফী বিন মোর্তজা নিশ্চিত করেছেন, গুলশান থানায় রাতেই মামলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এখন যা হবে সেটা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হবে।
সময় জার্নাল/আরইউ