মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনিকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগ এনে সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক দুই ওসি ও এক এস.আইয়ের বিচার দাবি করে মামলা করেছেন তার বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ।
মঙ্গলবার (১৭ আগষ্ট) সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল আদালতের বিচারক হুমায়ূন কবিরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিখোঁজ জনির বাবা শেখ আবদুর রাশেদ।
বিচারক মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন। সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক দুই ওসি এমদাদ শেখ ও ফিরোজ মোল্লা এবং এস.আই হিমেলকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলায় জনির বাবা শহরের পারকুখরালী এলাকার শেখ আবদুর রাশেদ বলেন, ২০১৬ সালের ৪ অগাস্ট তার ছেলে ডা. মোখলেসুর রহমান রাত ৯ টায় শহরের লাবনী মোড়ে ওষুধ কিনতে আসে। এ সময় সাতক্ষীরা সদর থানার এস.আই হিমেল তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লক আপের মধ্যে থাকা জনির সাথে কথা বলেন বাবা ও স্ত্রী জেসমিন নাহার রেশমা। পরপর দুই দিন সাক্ষাৎ এবং তাকে খাবারও দেন তারা। তার মুক্তি প্রসঙ্গে জানতে গেলে ওসি এমদাদ ও এসআই হিমেল রাশেদের কাছে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেন এবং বলেন জনি আল্লাহর দলের সদস্য ও জঙ্গি। পুলিশ তাদের কাছে তার আইডি কার্ডও চায়।
শেখ আবদুর রাশেদ মামলায় উল্লেখ করেন যে, পরদিন ৮ অগাস্ট ফের জনির সাথে দেখা করতে থানায় গেলে পুলিশ জানায় সে কোথায় তা আমাদের জানা নেই। বলা হয় আমরা জনিকে গ্রেপ্তার করিনি।
আবদুর রাশেদ আরো বলেন, বিষয়টি তিনি তৎকালিন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনকে জানান। পরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার স্ত্রী জেসমিন নাহার স্বামীর খোঁজ দাবি করেন। এ ঘটনার পর উচ্চ আদালতে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি রীট পিটিশন করা হয়। এরই মধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানায় জিডি করতে গেলে ওসি ফিরোজ মোল্লা তা গ্রহণ করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে হাইকোর্ট সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক দুই ওসি এমদাদ শেখ ও ফিরোজ মোল্লা এবং এস.আই হিমেলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। একই সাথে মামলার বাদীপক্ষকে ফৌজদারি মামলা করার আদেশ দেন।
শেখ আব্দুর রাশেদ এই মামলায় উল্লেখ করেন যে, তার ছেলে ডা. মোখলেসুর রহমান জনিকে পুলিশ অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করেছে। তিনি এর সঙ্গে জড়িত সাবেক ওসি এমদাদ শেখ, সাবেক ওসি ফিরোজ মোল্লা এবং সাবেক এস.আই হিমেলের বিচার দাবি করেন।
মামলাটি পরিচালনা করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ্যাড. ফরহাদ হোসেন ও এ্যাড. মোসলেম উদ্দিন। মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবীদ্বয় জানান, বুধবার আদালত এ মামলার আদেশ দেবেন।
সময় জার্নাল/এমআই