আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তালেবান কাবুল দখল করার সময়ই আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। এ ঘটনা বেশ তোলপাড় তোলার পর জানা যায়, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বুধবার লিখিতভাবে আমিরাত জানিয়েছে, মানবিকতার খাতিরেই তারা গানিকে আশ্রয় দিয়েছে।
এ দিকে ফেইসবুকে নয় মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন আশরাফ গানি।
সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ওখানে থাকলে আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হতো। আরও একজন প্রেসিডেন্টকে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলতে দেখতেন আফগান জনতা।”
এর আগে নাজিবুল্লাহকে পিটিয়ে মেরে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলিয়ে দিয়েছিল তালেবান।
সরকার গঠনের চলমান উদ্যোগে সমর্থন আছে উল্লেখ করে গানি বলেন, “আমি কাবুলে ফিরে আসা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। আমি চাই আফগানবাসী ন্যায় পান এবং প্রকৃত ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।”
তিনি দাবি করেন, তালেবানরা কাবুলে ঢুকবে না এমন চুক্তি ছিল। কিন্তু রোববার বিকেলে খবর পান, যোদ্ধারা একেবারে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত চলে এসেছে।
গনির কথায়, ‘‘এটা কোনোভাবেই আফগান সেনার জন্য হয়নি। এর জন্য দায়ী প্রভাবশালী রাজনীতিক ও কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী দেশগুলোর ব্যর্থতাও এর অন্যতম কারণ।”
গানি পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রচুর টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন, এমন করেছিল রাশিয়া। প্লেন বোঝাই করে অর্থ নিয়েছেন তিনি। রানওয়ের পাশেও অর্থ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। গানি বলেছেন, এটা একেবারে বাজে কথা। তিনি কিছু জামাকাপড় ছাড়া আর কিছুই নিতে পারেননি। একটা বইও নয়। অর্থ আনলে আমিরাতে চেকিংয়ে তা ধরা পড়ত।
আফগান প্রেসিডেন্ট প্রথমে তাজিকিস্তান যেতে চেয়েছিলেন, তারা আশ্রয় দেয়নি। পরে শোনা যায়, তিনি ওমানে আশ্রয় নিতে চান।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্বের তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমিরাত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতির অনেক অঙ্কই বদলে যায়। এবার তালেবানের বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আমিরাত গানিকে আশ্রয় দিয়েছে।
এর আগেও দেশ ছেড়ে আসা সর্বোচ্চ রাজনীতিকদের আশ্রয় দিয়েছে আমিরাত। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলুক সিনায়াত্রা, গত বছর স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোসকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। পাকিস্তানে ফেরার আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোও আট বছর আমিরাতে ছিলেন।
সময় জার্নাল/এসএ