জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আওনা ইউনিয়নের জগন্নাথগঞ্জ পুরাতন ঘাটে যমুনা নদীর ৪৬ কেজি ওজনের একটি সামুদ্রিক মাছের দেখা মিলেছে। এই মাছটিকে আগে কখনো এ অঞ্চলের মানুষ দেখেনি। মাছটিকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সেইল ফিশ বলছেন অনেকে। তবে মাছটির পিঠে বিশাল আকারের পাখনা থাকায় এটিকে স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ পাখি মাছ আবার কেউ বলছে গাং চ্যালা।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকালে সুরুজ হাওয়ালদার নামে এক ব্যক্তি মাছটি সিরাজগঞ্জের রোড থেকে কিনে নিয়ে আসেন। পরে তিনি স্থানীয়ভাবে এলাকার লোকজনের কাছে ৫০০ টাকা কেজি দরে ২৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
প্রায় নয় ফুট লম্বা মাছটি আজ ভোররাতে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী থেকে ধরা পড়ে বলে জানান সুরুজ হাওলাদার। এই সময় নতুন এই মাছটি দেখে উৎসুক অনেকে ভিড় করছে।
ব্যবসায়ী শাহীন এত বড় পাখনাওয়ালা মাছ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘মাছটি আগে কখনো দেখিনি। এটি দেখতে পাখির মতো।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সেইল ফিশের বৈজ্ঞানিক নাম Istiophorus platypterus। সেইল ফিশের আরেকটি জাত রয়েছে আটলান্টিক সেইল ফিশ (Istiophorus albicans)। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ন্যাশনাল ওশান সার্ভিসের তথ্যে দেখা যায়, অনেক মৎস্য বিশেষজ্ঞের মতে সেইল ফিশ মহাসাগরের সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী। মাছটি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে, তর্কসাপেক্ষে যা ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। নৌকার পালের মতো এর পৃষ্ঠীয় পাখনাটি দেখতে হয় বলে একে সেইল (পাল) ফিশ বলা হয়।
সুরুজ হাওলাদার জানান, শুক্রবার ভোররাতে রঞ্জিত নামে এক জেলে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে যমুনা নদীতে মাছ ধরতে যান। ২-৩ ঘন্টা পরে জালে বড় কোনো মাছ আটকা পড়েছে বলে ধারনা করেন তিনি। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে জাল টেনে নৌকায় তুলে দেখেন বড় এক পাখি মাছ ধরা পড়েছে। পরে দ্রুত মাছটি নৌকায় তুলে সোজা চলে আসেন মাছবাজারে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুছ বলেন, মাছটি সামুদ্রিক। বড় পাখনা থাকায় এটিকে পাখি মাছ বলা হয়। বিরল এ মাছ আগে কখনো এ অঞ্চলের মানুষ দেখেনি। এ কারণে মাছটি দেখার জন্য উৎসুক মানুষ ভিড় করছে।
মাছটি সম্পর্কে জানতে ঢাকা মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ছবি দেখে তিনি জানান, মাছটির নাম সেইল ফিশ। সাগরের সবচেয়ে দ্রুতগামী কয়েকটি মাছের মধ্যে এটি একটি। এ মাছ সাড়ে ৩ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। মাছটি ১০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। মাছের একটি পৃষ্ঠীয় পাখনা থাকে, যা অনেক বড় হয়। এতে অন্য কোনো মাছ তাকে দেখতে পায় না। মাছটি সাগর থেকে ভুলক্রমে নদীতে চলে আসতে পারে।
সময় জার্নাল/এসএ