শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

দোহায় শান্তি আলোচনা ছিল সর্বনাশের শুরু: আমরুল্লাহ সালেহ

শনিবার, আগস্ট ২৮, ২০২১
দোহায় শান্তি আলোচনা ছিল সর্বনাশের শুরু: আমরুল্লাহ সালেহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ক্ষমতার পালাবদলের ফলে আফগানিস্তানে সম্প্রতি যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, গত বছর দোহায় শান্তি আলোচনা শুরুর মাধ্যমে তার সূত্রপাত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আফগান সরকারের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ।

সম্প্রতি জার্মাানির পত্রিকা দের স্পিগেলকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আমরুল্লাহ সালেহ। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রায় দুই দশক ধরে দেশজুড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসা তালেবান বাহিনী কখনও রাজনৈতিক সমাধানে বিশ্বাসী ছিল না। এ কারণে দোহার শান্তি সংলাপ যে এক রকম ব্যর্থ হতে পারে তা আমি আগেই অনুমান করেছিলাম।’

‘কিন্তু এখন আমার মনে হচ্ছে, দোহার শান্তি সংলাপ শুধু ব্যর্থই হয়নি, বরং বর্তমানে আফগানিস্তানে যে পরিস্থিতি, তার সূত্রপাত হয়েছিল সেই সংলাপের মাধ্যমে। ওই আলোচনাই ছিল সর্বনাশের শুরু।’

গত বছর সেপ্টেম্বরে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগানিস্তানের তৎকালীন সরকারের সঙ্গে শান্তি সংলাপ শুরু হয় তালেবান বাহিনীর, যার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। ওই শান্তি সংলাপ চলার সময় আফগানিস্তানজুড়ে প্রায় প্রতিদিনই সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও তালেবানবিরোধী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুপ্তহত্যার শিকার হচ্ছিলেন।

চলতি বছর মার্চে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ঘোষণা করেন, তার সরকার তালেবান বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী এবং নির্বাচনের মাধ্যমে আফগানিস্তানে একটি নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তালেবানদের সহযোগিতা চায় তার সরকার।

তার এক মাস পর, এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর ২০ বছরের অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি টেনে ঘোষণা করেন, ২০২১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সাব সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমাকে এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।

বাইডেন এই ঘোষণা দেওয়ার পরের মাস, মে থেকে আফগানিস্তান দখলের অভিযান শুরু করে তালেবান বাহিনী এবং অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে, মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশটির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জশির ব্যতীত আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩ টিই নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়।

তারপর গত ১৫ আগস্ট কাবুলে প্রবেশ করে সশস্ত্র তালেবান সদস্যরা। তবে তাদের প্রবেশের আগেই কাবুল ত্যাগ করেছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ।

আশরাফ গনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। কাবুল ত্যাগের আগে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, আমরুল্লাহ সালেহ অবস্থান করছেন পাঞ্জশিরে। আফগানিস্তানে তালেবান বিরোধী প্রধান রাজনৈতিক দল নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের বর্তমান নেতা আহমাদ মাসুদের আশ্রয়ে আছেন তিনি। গত ১৭ আগস্ট এক টুইটবার্তায় নিজেকে আফগানিস্তানের বৈধ ও সাংবিধানিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছেন আমরুল্লাহ।

দের স্পিগেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ না করে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর উচিত ছিল, আরও কিছুদিন অন্তত আড়াই হাজার সৈন্য আফগানিস্তানে মোতায়েন রাখা। তারা সেটি করেনি এবং না করার ফলাফল এখন তাদের ভুগতে হচ্ছে।’

তালেবান বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করে আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানকে রক্ষা করতে দৃঢ়সংকল্প। যদি তারা (তালেবান) যুদ্ধ চায়, আমরা প্রস্তুত আছি।’

তালেবান বিরোধী লড়াই চালিয়ে যেতে আন্তর্জাতিক সমর্থনও প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

এদিকে, সম্প্রতি পাকিস্তানের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তালেবান ও নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের মধ্যে সংঘাতবিরতি চুক্তি হয়েছে।

সূত্র : স্পুটনিক নিউজ

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল