নোমান ইমতিয়াজ। রাবি প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আঠারো মাস বন্ধ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে শিক্ষার্থীরা সেশনজটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ লকডাউন শেষে বেশ কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আরও কিছু বিভাগে পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। কোনো কোনো বিভাগে ভর্তি ও ফরম পূরণের কার্যক্রম চলছে। ফলে শিক্ষার্থীদের বৃহৎ একটি অংশকে রাজশাহীতে অবস্থান করতে হচ্ছে। হল বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষার্থীকে রাজশাহীতে মেস ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। সেশনজট কাটাতে শিক্ষার্থীরা খরচ বহন করেও পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর যেসব বিভাগে এখনো পরীক্ষা শুরু হয়নি সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়।
তাই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা, ক্লাস ও হল খুলে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ নানা দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপ এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এসব দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদনও করেছেন। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও দাবি আদায়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর জোড়ালে ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও সংগঠনগুলোর নেতারা রয়েছেন নীরব ভূমিকায়। শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের পক্ষে এখনো তেমন কোনো ছাত্র সংগঠন সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় কোনো কোনো ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানালেও সেটি জোরালো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার দাবিতে বেশ কয়েকদিন লাগাতার আন্দোলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেসময় শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি ছিল হল খুলে পরীক্ষা নেওয়া। তবে শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিলে আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়। সেসময় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও কোনো সংগঠন তাদের আন্দোলনে সহায়তা করেনি। এরপরও বেশ কয়েকবার হল ও ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে বরাবরই নীবর রয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা। এ থেকে প্রশ্ন উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলোর কাজ কি? শিক্ষার্থীদের অধিকার ও দাবি আদায়ে তাদের ভূমিকাই বা কী?
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতারা বলছেন, তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় তারা কার্যক্রম চালাতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আমরা বরাবরই ছিলাম। লকডাউনে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বাড়িতে অবস্থান করছে। তাই বড় আকারে আন্দোলন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না থাকার কারণে কোনো দাবি উত্থাপন করতে পারিনি।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শামসুদ্দিন সানিন বলেন, দীর্ঘদিন রুটিন উপাচার্য থাকায় দাবি জানাতে পারিনি। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নতুন উপাচার্য এসেছে আমরা তার কাছে দাবি জানাব।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, যেহেতু সরকার অক্টোবরের মাঝামাঝি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই এই সময় পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। যদি এই সময়ে না খোলে তাহলে আমরা আমাদের মতো করে পদক্ষেপ নেব।
সময় জার্নাল/আরইউ