শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

গোপালগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ

রোববার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১
গোপালগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ

দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ। ৫টি উপজেলার কৃষকেরা এ পদ্ধতিতে সবজি ও মসলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে সদর উপজেলার রঘুনাথপুর,  পারকুশলী, নকড়িরচর, দিঘারকুল, ঘোষগাতী, কাজুলিয়া-বাজুনিয়া, নারিকেলবাড়ি, শেওড়াবাড়ি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর, বন্যাবাড়ী, মিত্রডাঙ্গা, জোয়ারিয়া, পাথরঘাটা, চাপরাইল, রুপাহাটি, পাটগাতী ও বর্নি কোটালিপাড়া উপজেলার ছত্তরকান্দা, কান্দি, লখন্ডা, কলাবাড়ি মুকসুদপুর উপজেলার তুতবাড়ি, কালিন্দির, কালিগঞ্জ, কাশিয়ানী উপজেলার,  রামদিয়া, বিদ্যাধর, তালতলা, নিজামকান্দিসহ বিভিন্ন বিলাঞ্চলে প্রায় ২হাজার কৃষক ভাসমান বেডে চাষাবাদ করছেন।


টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে কৃষি বিভাগের ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে আধুনিকভাবে ভাসমান বেডে চাষাবাদ শুরু হয়। প্রথমে গোপালপুর ইউনিয়নের অল্প কিছু কৃষক মাত্র ২০ হেক্টর জমিতে এই চাষাবাদ শুরু করে। বর্তমানে উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৮’শ কৃষক ভাসমান ধাপের চাষাবাদ করছে ও এবছর প্রায় ১৪’শ ভাসমান বেড তৈরি হয়েছে।

আগে কৃষকেরা ভাসমান বেড ইচ্ছামত লম্বা-চওড়া করতো। আর বেডের উপর উঠেই পরিচর্যা করতো ফলে বেড গুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে  যেত। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক উপায়ে  চাষাবাদ করছে কৃষকরা। নির্দিষ্ট চওড়া ও দৈর্ঘ্যের বেড নির্মাণ করে সুন্দর করে সাজিয়ে  রাখা সহ পরিচর্যা ও ফসল তোলার জন্য ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এতে দ্রুত ফসল নষ্ট হচ্ছে না ও দীর্ঘ সময় ভাসমান বেডে চাষাবাদ করতে পারছে কৃষকরা। 

এছাড়া দীর্ঘসময় পানিতে চাষাবাদের শেষে ভাসমান ধাপের কম্পোস্ট বা জৈব সার উঁচু জায়গায়  তুলে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে শীতকালীন সবজিতে রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন হচ্ছে না। এতে শতভাগ নিরাপদ সবজি উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে কৃষকেরা। 

বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষক শ্রীবাস বিশ্বাস, বরেন্দ্রনাথ মন্ডল, মিত্রডাঙ্গা গ্রামের কৃষক নৃপেন বিশ্বাস ও জোয়ারিয়া গ্রামের নরোত্তম বালা বলেন, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ জমি নিচু। একারনে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এজন্য স্বাভাবিক চাষাবাদ সম্ভব হয় না। জমিতে পানি জমে থাকায় আমাদের হাতেও কোন কাজ থাকে না। তাই কৃষি বিভাগের পরামর্শে অল্প কিছু কৃষক ভাসমান বেডে চাষাবাদ শুরু করি। পরবর্তীতে সল্প খরচে আমরা বেশ লাভের মুখ দেখি। তখন অন্যান্য কৃষকেরা ভাসমান ধাপের উপর চাষাবাদ করতে আগ্রহী হয়। আগে শুধুমাত্র গোপালপুর ইউনিয়নে ধাপের উপর চাষাবাদ শুরু হলেও বর্তমানে পাটগাতী ও বর্নি ইউনিয়নে ধাপের উপর চাষাবাদ শুরু করা হয়। 

এছাড়া কৃষি অফিস থেকে বেশ কিছু কৃষককে প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে ও বাকি কৃষকদের ভাসমান বেডের চাষাবাদে উৎসাহিত করার জন্য ভাসমান বেডের উপকরণ নেট, বাঁশসহ বিভিন্ন সবজির বীজ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন বলেন, এবছর টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় প্রায়  ১৪’শ ভাসমান বেডে চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। এই বেডে সবজি হিসাবে ঢেড়শ, পুঁইশাক, লালশাক, বরবটি, গিমা কলমি, কচু, লাউ, শশা, করলা ও মসলা হিসাবে হলুদ ও কাঁচামরিচের চাষাবাদ করা হয়। ইতিমধ্যে এসব বেড থেকে সবজি ও মসলা তোলা শুরু হয়েছে। সেগুলো বাজারে বিক্রি করে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এছাড়া যে ভাসমান বেড গুলো থেকে সবজি ও মসলা তোলা হয়নি সেগুলো কৃষি বিভাগের কর্মীরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। যাতে বেডে কোন ধরনের রোগবালাই ও পোকামাকড় আক্রমণ না করে। 

গোপালগঞ্জ জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ আ. কাদের সরদার বলেন, আগামীতে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ আরো জনপ্রিয় করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষকরাও ভাসমান বেডে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-পরিচালক অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করতে কৃষকরা এখন অনেক আগ্রহী। কৃষকদের সুফল পায়ওয়ার জন্য তাদের প্রশিক্ষন, পরামর্শসহ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

সময় জার্নাল/আরইউ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল