মাহবুবুল হক খান, দিনাজুর প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ১ বছর ৫ মাস ২৫ দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুর জেলায় ২ হাজার ৯৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলবে। এরই মধ্যে জেলার এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষগুলো পাঠদানের জন্য উপযোগি করা হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারা দেশের ন্যায় দিনাজপুরে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
এদিকে দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ ও হতাশা দূর হয়ে হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছিল। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ায় সেই হতাশা দূর হয়ে গেছে। তবে অভিভাবকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার দাবী জানিয়েছেন।
দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ২ হাজার ৯৬০টি। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ৮৭০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৫১টি, মাদরাসা ২৯৬টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৯৩টি ও ভোকেশনাল বা কারিগরি শিক্ষাপ্রষ্ঠিান ৫০টি। করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ, মাঠ ও আশপাশের জায়গা ময়লা-আবর্জনায় ভরে যায়। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ও চার পাশে আগাছায় ভরে যায়। তাই খোলার আগে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।
দেশে করোনায় প্রকোপ কমে আসায় শিক্ষামন্ত্রনালয় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়। পাশপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্যও নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রেণিকক্ষগুলো পাঠদানের জন্য উপযোগি করে গড়ে তোলা হয়।
জেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিতসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরিচালনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এসব কাজের মনিটরিং করবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা। শিক্ষক-অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের অভিমত, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরিচালনা ও পাঠদান অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
দিনাজপুর মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের (বাংলা স্কুল) প্রধান শিক্ষক মোঃ নেজামুল ইসলাম জানান, এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রতিটা শ্রেণিকক্ষ ধোয়া-মুছা, বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মাঠে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনাও পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদানের ব্যবস্থা করবো। বিদ্যালয়ে আসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে মাস্ক প্রদান করা হবে।
শহরের ঈদগাহ আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফজলুর রহমান জানান, স্কুলের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ, স্কুলের মাঠ পরিষ্কার করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদানের ব্যবস্থা করবো।
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চৌধুরী জানান, ১২ সে্েপ্টম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চালুকে কেন্দ্র করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ডাইড লাইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সঠিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়গুলো সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হবে বলে তারা দু’জন জানান।
সময় জার্নাল/ইএইচ