ডাক্তার ফারজানা তাসনিম সাগরদাড়ি ট্রেনে গতরাতে (শুক্রবার দিবাগত রাত) আসছিলেন খুলনা থেকে। বসেছিলেন ঙ বগির একটি আসনে। ঈশ্বরদী থেকে ট্রেন ছাড়ার পর পরই ট্রেনের মাইকে একটি ঘোষণা বারবার শুনতে পান, প্রসব যন্ত্রণার কাতরানো এক নারী যাত্রীকে সহযোগিতা করতে ডাক্তার প্রয়োজন।
কিছুক্ষণ হতবিহবল হয়ে থাকার পর নিজেকে আর সামলাতে পারেননি, আবেগ আর মানবতার টানে তিনি ছুটে যান ছ বগিতে সেই নারী যাত্রী সাবিনার কাছে। যেয়ে দেখেন বাচ্চা হবার উপক্রম। রেল কর্মীদের কাছে চেয়ে নিলেন ফার্স্ট এইড বক্স। সেখানে যা ছিল তা দিয়েই সংক্ষিপ্ত সার্জারির কাজটি সারলেন। মা ও সন্তানকে আলাদা করলেন। তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে ছুটে গেলেন তাঁর নির্ধারিত আসনে। সেখানে তার ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল।
রাজশাহীর উপশহরের এই মানবিক কন্যা ডাক্তার ফারজানা ৪২ তম বিসিএস পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী সার্জন হিসেবে এখন সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার অপেক্ষায়। রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজের এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ইন্টার্ন করেন সেখান থেকেই। এরপর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আরবান হেলথ কেয়ারে চাকরি করেছেন। ফারজানার পিতা গণপূর্ত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী সোলায়মান আলী তার মেয়ের এই মানবিক সেবায় মুগ্ধ ও গর্বিত। তিনি সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।
লেখক :
অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন, ৩৩ তম বিসিএস।
চিফ এডিটর, পেন পয়েন্ট।