মাহমুদুল হাসান।কুবি প্রতিনিধি: সেশনজট নিরসন ও পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে ‘সরাসরি উপাচার্যের কাছে যাওয়া’, ‘আন্দোলন’ ও ফেসবুকে লেখালেখি করাসহ নানা অভিযোগে ৪০ শিক্ষার্থীকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সেই নোটিশে বেশ কয়েকটি গুরুতর বানান ভুল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চলছে সমালোচনা৷ নেটিজেনরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি বিভাগের প্রধানের স্বাক্ষরিত নোটিশে এমন বানান ভুল লজ্জাজনক।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দাফতরিক প্যাডে দেয়া ও বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ পড়ে দেখা যায়, এতে অন্তত ১৩টি বানান ভুল লেখা হয়েছে। শুরুতে তারিখের ঘরে ২০২১ এর স্থলে লেখা হয়েছে '২০২-১'। নোটিশের ভাষ্যে দ্বিতীয় লাইনে অন্তত তিনটি বানান ভুল লেখা হয়েছে। যার মধ্যে আছে, 'প্লাটফর্ম' শব্দটি। যার প্রচলিত সঠিক বানান 'প্ল্যাটফর্ম'। এছাড়া, লেখা হয়েছে 'সোসাল' যার প্রচলিত বানান সোশ্যাল। আবার ফেসবুকে লিখতে গিয়ে লেখা হয়েছে 'ফেইজবুকে'।
অন্যদিকে, তৃতীয় লাইনের শুরুতেই কটূক্তি বানানটিকে লেখা হয়েছে 'কটুক্তি'। একই লাইনে এমনকি এর জায়গায় লেখা হয়েছে 'এমন কি', এছাড়া অভ্যন্তরীণ শব্দটিকে লেখা হয়েছে 'আভ্যন্তরীণ।
এর পরে চতুর্থ লাইনে স্ক্রিনশট শব্দটির বানান লেখা হয়েছে 'স্কিনশট'। তবে, পঞ্চম লাইন থেকে শুরু করে সপ্তম লাইন পর্যন্ত আর বানান ভুল চোখে না পড়লেও অষ্টম লাইনের শুরুতেই ব্যতিরেকে বানানের স্থলে লেখা হয়েছে 'ব্যাতিরেকে'৷ একই লাইনে শরণাপন্ন বানানটিকে লেখা হয়েছে 'স্মরণাপন্ন'। এর পরের লাইনে আবার লঙ্ঘন এর স্থলে লেখা হয়েছে 'লঙ্ঘণ'।
নোটিশের মূল ভাষ্যের শেষ অংশের শুরুর লাইনে পাশাপাশি দুইটি বানান ভুল লেখা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত বানান লেখা হয়েছে 'অনাকাঙ্খিত', পরের বানানেই কর্মকাণ্ডের জায়গায় লেখা হয়েছে 'কর্মকান্ডের'। নোটিশে এমন ভুল বানানের ছড়াছড়ি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলছে সমালোচনা, হাস্যরস।
এন. সজীব নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, 'শিক্ষক হয়ে এমন ভুল কীভাবে করেন তারা? তাদেরই বরং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া উচিত৷'
ভুল বানানে লেখা নোটিশের সমালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ঢালাওভাবে নোটিশ প্রদান করে ওনারা নিঃসন্দেহে ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতা প্রকাশ করেছেন । আর নোটিশে এ ধরনের ভুলগুলোই যথেষ্ট প্রমাণ করে শিক্ষক হিসেবে ওনারা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কতোটা যত্নশীল এবং কতোটা গুরুত্ব দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬-১৭ সেশন এবং ওই বিভাগটির চতুর্থ ব্যাচের ৪০ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর ওই নোটিশ দেয়া হয়৷ ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২০১৭ সালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রায় পাঁচ বছরে মাত্র চার সেমিস্টার শেষ করে পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষায় বসেছে। সেশনজট নিরসনে দাবি জানিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি, আন্দোলন ও সরাসরি উপাচার্যের কাছে যাওয়ায় তাদের এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
সময় জার্নাল/আরইউ