শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে উদগ্রীব ডিআইইউয়ানরা

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে উদগ্রীব ডিআইইউয়ানরা

ইসমাম হোসেন, ডিআইইউ প্রতিনিধি: অদৃশ্য এক করোনা ভাইরাসের প্রকোপে স্থবির গোটা বিশ্ব। প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা।

দীর্ঘদিন ছুটিতে দুরন্তপনা স্বভাবের শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়েছে ঘরকুনো। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে হতাশা। প্রায় সবকিছু খুলে দিলেও বন্ধছিল দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ খুলে দিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খুলেনি, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য ঘোষণা দিয়েছে আগামী ২৭ তারিখের পর সিদ্ধান্ত জানাবে।

ক্যাম্পাসে ফেরার প্রহর গুনছে প্রতিটা শিক্ষার্থী। আশায় বুক বেঁধে আছে প্রতিটা শিক্ষার্থী কবে ফিরবে প্রিয় ক্যাম্পাসে। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার অনুভূতির কথা তুলে ধরেছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সময় জার্নাল প্রতিনিধি ইসমাম হোসেন


ফারিয়া ইসলাম, ইংরেজি বিভাগ

ক্যাম্পাসের দিনগুলো ঠিকঠাকই চলছিলো। কিন্তু হুট করেই পৃথিবীতে করোনার আবির্ভাব। করোনার কারণে গতবছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এই করোনাকালীন সময়ে বাসায় থাকার ফলে ক্যাম্পাসটাকে খুব বেশি মিস করছি আর তার সাথে বন্ধুদেরও খুব মিস করছি। অনেক দিন হয়ে গেছে বন্ধুদের সাথে একসাথে বসে আড্ডা দেয়া কিংবা চা খাওয়া হয় না। ক্লাসের ফাঁকে যখন সময় হতো সবাই মিলে ক্যান্টিনে বসে এক সাথে আড্ডা দিয়েছি-এইটা খুব মিস করছি এই সময়টাই। আর খুব বেশি মিস করছি ক্যাম্পাসের গানের আড্ডাটা। সময় হলেই গানের আড্ডায় অংশ নিতাম ভালো ছিলো দিনগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নজর কাড়া সৌন্দর্য প্রতিদিনই উপভোগ করতাম। তার সাথে সবুজ মাঠের খেলাধুলার আমেজও আর অনুভব করতে পারছি না। ক্লাসের ফাঁকে ক্যান্টিনের গরম গরম সিঙ্গারা আর তার সাথে দলবেঁধে ক্যান্টিনে গিয়ে খাওয়া আর আড্ডার সময়টা ছিল অত্যন্ত আনন্দের।

সেই থেকে একটাই চাওয়া ছিলো ধরণী সুস্থ হয়ে আমাদেরকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিবে। অবশেষে সকল হতাশার অবসান ঘটিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অনুমতি দিয়েছেন ইউজিসি।  ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনুভুতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আবার ফিরে পাবো সহপাঠীদের, ডিপার্ট্মেন্টের সিনিয়র জুনিয়র আর আমার প্রিয় শিক্ষকদের। আবার জমবে আমাদের আড্ডা। আড্ডায় মুখরিত হবে সবুজ ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস ফিরে পাবে তার প্রাণ।

সুমনা খাতুন, আইন বিভাগ

আসলে দেশের মধ্যে যখন কোভিড-১৯ নামক ভয়াবহ ভাইরাসটি প্রবেশ করে এবং ভাইরাসটি প্রবেশের সাথে সাথে আমাদের দেশের শিক্ষার সকল বাতিঘর গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই অনুসারে আমার প্রাণের ক্যাম্পাস ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিও বন্ধ করে দেওয়া হয় (যদিও আমার ইউনিভার্সিটি কোভিড-১৯ এর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে কোন রকমের কোন বিলম্ব না করে জুম অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু করেন এবং সেটা আজও চলমান)। কোভিড-১৯ দেশের মধ্যে বিরাজমান হওয়ায় আমাদের দেশ এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল এবং এই অনিশ্চয়তার মাঝে আমাদের ইউনিভার্সিটি কবে খুলবে, কবে আমরা ইউনিভার্সিটিতে যেয়ে স্বশরীরে ক্লাস করতে পারবো; কবে আমাদের সেই পরিচিত মুখগুলো (শিক্ষক-শিক্ষিকার) সাথে দেখা হবে এবং কবে প্রিয় বন্ধু -বান্ধবের সাথে সেই আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাসে এক আড্ডার আসরে একত্রিত হবো? এগুলো নিয়ে খুব মানসিক টেনশনে ছিলাম। 

কিন্তু যখন শুনলাম আমাদের দেশের সকল ইউনিভার্সিটি আগামি ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলতে পারবে তখন মনের মধ্যে এক আনন্দময় অনুভূতির সৃষ্টি হলো। তখন মনে হলো আমরা আগের মত করে আমাদের সেই প্রিয় ক্যাম্পাসে যেতে পারব; নতুন কিছু ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করতে পারব ; প্রিয় মুখগুলোর (শিক্ষক-শিক্ষিকার) সাথে দেখা হবে; বন্ধু-বান্ধবের সাথে আগের মত সেই প্রিয় ক্যাম্পাসে আড্ডার আসরে বসতে পারব; চিরচেনা সেই ক্লাসে বসেই আগের মত ক্লাসে উপস্থিত হয়ে ক্লাসের সকল পাঠদান গ্রহন করতে পারব; এবং পূর্বের ন্যায় ইউনিভার্সিটি থেকে আমরা আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে পিকনিক, ট্যুরে যেতে পারব। সব কিছু মিলিয়ে যখন শুনতে পেলাম দেশের সকল ইউনিভার্সিটি আগামি ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলতে পারবে তখন মনের মধ্যে এক অন্যতম ভালোলাগা কাজ করতেছিল।

ফাতেমা-তুজ-জোহরা, ইংরেজি বিভাগ

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর ক্যাম্পাসে গিয়ে ক্লাস করার সুযোগ খুব বেশি হয়নি। করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল মজা এখনও উপভোগ করতে পারিনি। ক্যাম্পাসে বসে বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডা দেওয়া এখনও বাকি। ক্লাসে বসে টিচারদের লেকচার শোনা অনেক মিস করি। এমন নানান অভিযোগ যখন মনে ভর করে বসে তখন বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সংবাদ সত্যি খুব আনন্দের। 

দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিলো বলে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশুনা থেকে ঝরে পড়েছে। আমরাও আমাদের অনেক ক্লাসমেটকে হারিয়েছি জানিনা তাদের আবার ফিরে পাবো কিনা, তবে চাই তারা ফিরে আসুক। হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সংবাদ অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে আবার পড়াশুনা করার ইচ্ছা জাগ্রত করতে করবে। আমরাও চাই সকল শিক্ষার্থী আবার পড়াশোনায় ফিরে আসুক যেহুতু "শিক্ষাই জাতির মেরদণ্ড"। 

অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও আমাদের মধ্যে পড়াশুনা করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। পড়াশুনার আসল মজা তো বিদ্যালয়ে গিয়েই উপভোগ করা যায়। 

এখন সময় হয়েছে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে যাবার, নতুন করে আবার ইউনিভার্সিটি লাইফ শুরু করার।আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সংবাদ আমাদের মধ্যে পড়াশুনা করার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিবে।পড়াশুনা করে আমরা আমাদের দেশকে আরো ভালো ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পারবো।

মহিউদ্দিন মারুফ (সাইমন), ফার্মাসি বিভাগ

ভার্সিটিতে ভর্তি হবার শুরু থেকেই আমরা অনলাইন ক্লাস দিয়ে শুরু করেছিলাম আমাদের ভার্সিটি লাইফ। যেখানে ভার্সিটির প্রথম দিকের সুন্দর মূহুর্তগুলো থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা। কে না চায় ভার্সিটির লাইফটা সুন্দরভাবে কাটাতে? কিন্তু আমরা, এই করোনার জন্য ভার্সিটির সুন্দর মূহুর্তগুলো হারিয়ে ফেলেছি জীবন থেকে।

এখন যখন শুনতে পেলাম ২৭ সেপ্টেম্বরের এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে, তখন আমাদের মনে দারুণ এক অনুভতির বঃহিপ্রকাশ হয়। নতুন এক প্রতিষ্ঠানে নতুনভাবে পদার্পণ করবো। শিক্ষকদের সাথে সরাসরি কথা বলবো, ক্যাম্পাসের আবহাওয়া গায়ে লাগবে। সত্যি! এই অনুভতি ভাষায় প্রকাশ করার মত না! সবুজ ক্যাম্পাসের মুক্ত অক্সিজেন গ্রহণ করবো, ফুলের সুভাষে ভরপুর, ক্যাম্পাসের হাওয়া গায়ে লাগবে, সবার সাথে ভার্চুয়াল জগৎ থেকে বের হয়ে এক সাথে বসে কথা বলা হবে, আলহামদুলিল্লাহ!। আহ!! কি দারুন অনুভূতি। মহান আল্লাহ সহায় হয়ে যে আমাদেরকে নতুনভাবে নতুন এক বটবৃক্ষের ছায়ায় পদার্পণ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন এই কারণে মহান আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে লক্ষ কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল