সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় ৯০ ভাগ যক্ষ্মা রোগীই পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শ্যামলীতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টার ও রিজিওনাল টিবি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি আর্ল আর মিলার, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, ইউএসএআইডি-বাংলাদেশ-এর উপ মিশন পরিচালক র্যান্ডি আলী, আইসিডিডিআর,বি এর ডা. তাহমিড আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমবিডিসি’ শাখার পরিচালক এবং টিবি লেপ্রসি’র লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল ইসলাম, শ্যামলী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোঃ আবু রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “প্রতি বছর দেশে গড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ টিবি রোগে আক্রান্ত হয়। বর্তমানে কোভিডকালীন মহামারীতে অন্যান্য রোগের সাথে এই রোগের চিকিৎসাও স্বাস্থ্যখাতকে দিতে হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যখাত কোভিড, ডেঙ্গু চিকিৎসার পাশাপাশি যক্ষ্মা রোগেরও সঠিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগে প্রতি বছর গড়ে ৯০ ভাগ মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টার প্রমাণ করে এই সরকার রোগীবান্ধব ও জনগন কেন্দ্রিক সেবা প্রদানে কতটা আন্তরিক। আমরা দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও রোগীবান্ধব ও জনগণ কেন্দ্রিক যক্ষ্মার সেবাদান কার্যক্রম সম্প্রসারণ করব। ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে যৌথভাবে কাজ করার এক অনন্য নজির।
আমাদের সরকার যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যা ২০৩০ সালের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও অবদান রাখবে।এছাড়াও যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”
সভায় উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, “এই অসাধারণ ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টারের দ্বার-উন্মোচন করতে পেরে ও যারা যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েও এর বিরুদ্ধে নিয়মিত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাঁদের জীবন রক্ষায় অবদান রাখতে পেরে আমরা যারপরনাই আনন্দিত। বাংলাদেশের মানুষদের স্বাস্থ্যকর ও উন্নত জীবনের জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যে সমন্বিত প্রচেষ্টা এই সেন্টারটি তারই স্মারক।”
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, “আগে বলা হতো যার হয় যক্ষ্মা, তার নেই রক্ষা। এখন আর সেই কথাটি প্রচলিত নেই। এখন সময় মতো চিকিৎসা নিলে যক্ষ্মা রোগ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। ”
ইউএসএআইডি-এর ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর র্যান্ডি আলী বলেন, “সব ধরনের যক্ষ্মা, বিশেষ করে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে যক্ষার বিস্তার রোধ ও বাংলাদেশীদের জীবন রক্ষায় এর ভূমিকা অপরিসীম হবে।”
বিগত ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র যক্ষা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়নের বেশি অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে ও যক্ষার দ্রুত পরীক্ষায় ৭২টি জিন এক্সপার্ট মেশিন দিয়েছে যাতে যক্ষা শনাক্তের ও চিকিৎসার হার বাড়ে এবং যক্ষা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, 'বাংলাদেশ সরকার যক্ষা নির্মূলে এবং যক্ষা চিকিৎসা, নির্ণয় ও প্রায়োগিক গবেষণায় ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টারকে “সেন্টার অব এক্সসেলেন্স” পরিণত করার ক্ষেত্রে কতটা বদ্ধপরিকর।
সময় জার্নাল/ইএইচ