শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘বাচ্চাদের ভাইরাস জনিত রোগ: হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ’

শনিবার, অক্টোবর ২, ২০২১
‘বাচ্চাদের ভাইরাস জনিত রোগ: হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ’

ডা. ইসমাইল আজহারি। এটি বাচ্চাদের ভাইরাস জনিত একটি জটিল সংক্রামক  রোগ। কক্সাকি ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হয়ে থাকে। ৫ বছরের কম বয়সের শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যায় এবং তার যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাহলে সেও এই ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে।

উপসর্গ-
ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হবার ৩-৬ দিনের মধ্যে অল্প তাপমাত্রা থেকে মধ্যমমানের (১০২ ডিগ্রি)  তাপমাত্রা সহকারে জ্বর আসবে। 

জ্বর হবার ২৪ ঘন্টার মধ্যে গলা ব্যাথা শুরু হবে, খাওয়ার রুচি কমে যাবে. ক্লান্তি লাগবে, শরীর দূর্বল হয়ে যাবে, গলা ব্যাথার কারণে বাচ্চা খাবার কিংবা পানি কিছুই খেতে চাইবে না তখন পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। গলা ব্যাথার পাশাপাশি মুখ গহব্বরের ভিতর ছোট ছোট সাদা আকৃতির ফুসকুড়ি দেখা দিবে,  ঠোঁটের আসেপাশে র‍্যাশ দেখা দিবে, র‍্যাশগুলি কিছুটা পেইনফুল হবে। র‍্যাশ গুলিতে চুলকানিও থাকতে পারে।
জ্বর শুরু হবার ২-৩ দিনের মধ্যে হাত ও পায়েও র‍্যাশ দেখা দিবে। হাত, পা ও মুখ কে আক্রান্ত করার কারণে এই রোগ কে হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ বলে।

কারণ:
কক্সাকি ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হলেই এই রোগ হয়।
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল, তারা কক্সাকি ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হলে এই রোগ দেখা দেয়।

যেভাবে ছড়ায়:
এই রোগ মূলত ফিকো-ওরাল রুট এবং নাকের পানি,  থুথু, ও কাশির মাধ্যমে  ছড়ায়। এবং হাত ও পায়ের র‍্যাশ সমূহের সংস্পর্শেও ছড়ায়। তাই বলা যায়, এই রোগ নিম্নোক্ত উপায়ে ছড়াতে পারে-
১.আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে
২. আক্রান্ত ব্যক্তির জামা কাপড় ব্যবহার করলে 
৩. আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত গ্লাস ব্যবহার করলে কারণ সেখানে স্যালাইভা থাকতে পারে এবং স্যালাইভাতে ভাইরাস থাকতে পারে। 
৪. দুষিত পানির মাধ্যমে, যথা আক্রান্ত ব্যক্তির মল যুক্ত কোনো কাপড় যদি পুকুরে ধৌত করা হয় তাহলে সেই পানিতে ভাইরাস থাকবে। আবার সেই ভাইরাস সমৃদ্ধ পানি কোন ভাবে খাওয়া হলে সেইক্ষেত্রেও এই রোগ হতে পারে।

জটিলতা:
এই রোগ থেকে টনসিলাইটিস, ফ্যারিঞ্জাইটিস, ল্যারিনজাইটিস,  মেনিনজাইটিস,  সেকেন্ডারি স্কিন ইনফেকশন হতে পারে।

প্রতিরোধ:
খাবার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়া, বিশুদ্ধ পানি পান করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চলা, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না যাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়৷ আবার অনেকেই ছোট বাচ্চাদের আদর করে কিস করে থাকেন এতে করা বাচ্চারা বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস জনিত রোগের ঝুকিতে থাকে। তাই এভাবে আদর করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বাচ্চাদের নিরাপদ রাখতে হবে।মা বাবার এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সেই সাথে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা, ভিটামিন এ,ই সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই এসব খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ চলবে এতে বাচ্চাদের ইমিউনিটি বাড়ে।

চিকিৎসা:
যেহেতু এটা ভাইরাস জনিত রোগ তাই এই রোগ অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগের মত ৭-১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।
তাই বাচ্চা যদি ঠিকমত খাবার খেতে পারে, তাহলে তেমন একটা চিকিৎসার প্রয়োজন হয়না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সাথে চুলকানি কমানোর জন্য এন্টি হিস্টামিন দেওয়া যেতে পারে, আর জ্বর না থেকে শুধু ব্যাথা থাকলেও প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন দেওয়া যেতে পারে।  সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সিভিট৷ জিংক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।তবে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা যেনো পর্যাপ্ত নিউট্রিশন পায় এবং কোনো ভাবেই যেনো ডিহাইড্রেশন বা পানি শুণ্যতা না হয়। পানি শুণ্যতা দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে শিরাপথে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। যেকোন সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক : সিইও, সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স এন্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ 
ইমেইল: ismailazhari49@gmail.com

সময় জার্নাল/আরইউ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল