সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিনের সেই মোটর সাইকেলটি পাচ্ছেন সিলেটের মেয়ে স্বাস্থ্যকর্মী সানজানা শিরিন। এর কারণ হিসেবে, ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিন বলেন, সিজার অপারেশন করা যেখানে অনেকটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে সেখানে এক দুজন বা এক দুশো নই, ছয়শত উনত্রিশ জন মা'কে একজনেই নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন! এ কি ভাবা যায়!! বিস্ময়কর বিষয় হলো প্রায় ৬ হাজার মানুষের বিপদের মুহুর্তে তিনি রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছেন। নিজের রক্ত ২১ বার বিলিয়ে দিয়েছেন পরের তরে।
দুই শতাধিক মানুষের জন্য খাবারের আয়োজন করেছেন ২১ বার, ৪টা পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ, মহিলাদের আত্মনির্ভরশীলতা প্রোগ্রামের আওতায় সেলাই মেশিন বিতরণ, নলকূপ স্থাপন কার্যক্রম আমাদেরকে দারুনভাবে নাড়া দিয়েছে। সিলেটের একটা হাসপাতালে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট পদে স্বল্পবেতনের একজন চাকুরীজীবি হয়েও তিনি যে মহত্ত্ব প্রতিদিন স্থাপন করে যাচ্ছেন আমরা খুবই নিশ্চিত তিনি আগামীতে অনেকের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন।
মোটর সাইকেলটি দেয়ার কথা ছিল পুলিশের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে নিজের মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়া পাঠাও চালক শওকতকে। আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিন এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ঘোষণার পর পরই ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী বাইক কিনে দেন শওকতকে। এ ঘটনাকে সাধুবাদ জানিয়ে মানবিক কাজে জড়িত অন্য যে কাউকে ঘোষণাকৃত মোটর সাইকেলটি তুলে দেয়ার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়ে দেন ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন। প্রায় দুশতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে বাইকটি দেয়ার জন্য সিলেটের মেয়ে স্বাস্থ্যকর্মী সানজানা শিরিনকে বাছাই করেছেন তিনি।
এবিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিন। তিনি লিখেছেন,
ইশ আমরা যদি অনেক গুলো মোটর সাইকেল দিতে পারতাম!
অতি অল্প সময়ের মধ্যে এত্তোগুলো আবেদন পেয়ে আমরা প্রচন্ড চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। মানবিক কাজে একেকজন একেক যোগ্যতা সম্পন্ন। কাকে বাদ দিয়ে কাকে দেয়া যায়! খুবই দুরূহ বিষয়!
নিজেদের পরিবারের দুঃখের কথা উল্লেখ করে এমন এমন আবেদন আমরা পেয়েছি, যাতে সহজেই বুঝেছি একটা মোটর সাইকেল পেলে উনারা নিজেদের পরিবারকে ভালোই সাপোর্ট দিতে পারবেন।
করোনাকালীন সময়ে, করোনাকালীন সময়ের আগে থেকে মাঠে ময়দানে কাজ করা এমন এমন ভাইয়ের আবেদন আমরা পেয়েছি যাদেরকে আমরা অন্তর থেকেই শ্রদ্ধা ও স্যালুট জানাচ্ছি। আমরা উনাদের নাম শ্রদ্ধাচিত্তে আমাদের ডায়েরীতে লিপিবিদ্ধ করে রাখছি। সময় সুযোগ হলে কোন এক সময় এ সময়ের মুক্তিযুদ্ধাদের আমরা অফিসিয়ালি শ্রদ্ধা জানাবো, ইনশাআল্লাহ।
আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছিলাম, দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-লিংগ নির্বিশেষে সকলেই এখানে আবেদন করতে পারবেন। সে মতে বহু আবেদনই রিসিভ করেছি। সকলের নিজ নিজ আবদান গুলোর বিষয়ে আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখে একজনের কিঞ্চিৎ অবদান স্বশ্রদ্ধ চিত্তে উল্লেখ করছি।
সিজার অপারেশন করা যেখানে অনেকটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে সেখানে এক দুজন বা এক দুশো নই, ছয়শত উনত্রিশ জন মা'কে একজনেই নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন! এ কি ভাবা যায়!! বিস্ময়কর বিষয় হলো প্রায় ৬ হাজার মানুষের বিপদের মুহুর্তে তিনি রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছেন। নিজের রক্ত ২১ বার বিলিয়ে দিয়েছেন পরের তরে।
দুই শতাধিক মানুষের জন্য খাবারের আয়োজন করেছেন ২১ বার, ৪টা পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ, মহিলাদের আত্মনির্ভরশীলতা প্রোগ্রামের আওতায় সেলাই মেশিন বিতরণ, নলকূপ স্থাপন কার্যক্রম আমাদেরকে দারুনভাবে নাড়া দিয়েছে। সিলেটের একটা হাসপাতালে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট পদে স্বল্পবেতনের একজন চাকুরীজীবি হয়েও তিনি যে মহত্ত্ব প্রতিদিন স্থাপন করে যাচ্ছেন আমরা খুবই নিশ্চিত তিনি আগামীতে অনেকের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন।
তাঁর নিজ জেলায় একটা বৃদ্ধাশ্রম করার স্বপ্ন ইতোমধ্যে বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। অসহায় বৃদ্ধ মা-বাবাদের রাখার জন্য বিশাল একটা জায়গা ক'দিন আগেই বায়না করে ফেলেছেন। এই মহতী ত্যাগী বোনটা আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের একজন মহিলা সদস্য বটে। সংগত কারণেই আমরা শ্রদ্ধাচিত্তে সিলেটের সানজানা শিরিনের হাতে আমাদের ছোট্ট উপহারটা তুলে দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গতকাল রাতে তার পক্ষ থেকে আরেকজন ব্যক্তি আবেদন করেছিলেন। আজ সকালে সানজানার সাথে কথা হয়েছে। নিজ কাজের ব্যস্ততায় তাঁর চট্টগ্রাম আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তাই আমরা মোটর সাইকেলটা কুরিয়ারে করে আগামীকালই সিলেটে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
ধন্যবাদ প্রিয় সানজানা শিরিন। মানব কল্যাণে তোমার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপ নেয়ার বিষয়ে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভকামনা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
ইতোমধ্যে পোস্ট সংগত কারণে কর্জে হাসানা বিষয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের সদয় জ্ঞাতার্থে কিছু বিষয় জানিয়ে দেয়া বলে প্রয়োজন মনে করছি।
১. পূর্বের মতো আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের কর্জে হাসানা ফান্ড কার্যক্রম চালু আছে।
২. ফান্ড স্বল্পতা ও সীমিত স্থায়ী কর্ম এলাকার কারণে এ কার্যক্রমটা আপাতত চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানাধীন এলাকার জন্য প্রযোজ্য।
৩. ফাউন্ডেশনের স্থায়ী কার্যক্রম এলাকা বৃদ্ধি হলে আশাকরি এই দেশের আরো অনেক স্থানে কর্জে হাসানা কার্যক্রম শুরু হবে, ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান সময়ে দারিদ্র্যতা বিমোচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্জে হাসানা ফান্ডে আগ্রহী কেউ আর্থিকভাবে অংশগ্রহণ করতে চাইলে নিঃসংকোচে যোগাযোগ করার বিনীত অনুরোধ রইলো।
সম্মিলিত প্রয়াসে এগিয়ে চলুক মানব সেবা।