মো. নিজাম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেছেন, ‘সুষ্টু নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হতে চাই।
আওয়ামীলীগ গত ৪২ বছরে লক্ষ্মীপুর এবং এ রায়পুরের মানুষের জন্য কাজ করেছে। বিগত সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। যেন-তেন নির্বাচনে নির্বাচন করে বিজয়ী হতে চাই না। আমি চাই একটি কঠিনতম
নির্বাচনে ‘নির্বাচন যুদ্ধ’ করে জনগণের রায় নিয়ে বিজয়ী হতে’।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুরে পথসভায় জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দলীয় মনোনয়পত্র পাবার পর ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুরে আসার পথে নির্বাচনী এলাকায় রয়পুর এবং দালালবাজারে তাকে সংবর্ধনা দেয় দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান তারা। পথে পথে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
পথ সভায় বক্তব্যে এড. নয়ন বলেন, ‘ ৪২ বছর আমি কর্মী এবং দলের জন্য কষ্ট করেছি। বক্তিগত সুখ স্বাচ্ছন্দকে ত্যাগ করে আমি কর্মীদের পাশে ছিলাম। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের ফোন ধরেছি, দেখা করেছি। আমি কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট ছিলাম আমার এ যুদ্ধে আপনারা আমার পাশে থাকবেন। আমরা একটি ব্যাতিক্রমী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রমান করতে চাই এ এলাকার মানুষ মাঠের প্রার্থীকে জীবন দিয়ে হলেও বিজয়ী করবে’।
তিনি বলেন, ‘অতীতে আপনাদেরকে এমপির কাছে যেতে হতো, আগামীতে এমপির কাছে যেতে হবে না। এমপি আপনাদের কাছে যাবে। প্রতি মাসে একেকটি ইউনিয়নে নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের কথা শুনবো। ৪২ বছর রাজনৈতিক জীবনে জনপ্রতিনিধির চেয়ারে না থাকার কারণে দলীয় কর্মীদের উন্নয়নের সেবা দিতে পারিনি। আমি আপনাদের উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য এমপি হিসেবে প্রার্থী হওয়ার জন্য আপনাদের অনুরোধে আগ্রহ প্রকাশ করেছি’।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শতভাগ আগ্রহ সহকারে তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে নিজে প্রস্তাব দিয়ে আমাকে মনোনয়নটা দিয়ে এখানে পাঠিয়েছেন। অত্যন্ত জেনে শুনে বুঝে তিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এটি ছিলো একটি আলোচিত মনোনয়ন’।
তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় এলাকা লক্ষ্মীপুর-২ আসন। দীর্ঘদিন যাবৎ সংসদ সদস্যের অভাবে এ এলাকা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তার আগে ২০১৪ তে এ এলাকায় জাতীয় পার্টির এমপি থাকাতে এ এলাকার উন্নয়ন হয়নি। এছাড়া পূর্বে বিএনপি এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়ার আমলেও এ এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ
সমস্যার কথা চিন্তা করে ব্যাপক যাচাই-বাছাই করে এ নির্বাচনী এলাকার দিকে কঠোর দৃষ্টি দিয়েছেন। বিগত ১০-১২ বছর আপনারা যে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য এমন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন যার মাধ্যমে আগামী দিনে দ্বিগুণ-তিনগুণ উন্নয়ন করে দ্রুত সময়ে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন’।
নির্বাচিত হলে তিন দিনের কাজ একদিনে করার চেষ্টা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গভীর রাত পর্যন্ত শ্রম, ঘাম, ও মেধা দিয়ে আপনাদের সেবা করবো’। এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষা ব্যবস্থা, গরীবের সেবা এবং মাদক নিয়ন্ত্রণসহ আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, মানব ও অর্থ পাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতের রায়ে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের দন্ডিত হওয়ায় তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়।
আগামী ১১ এপ্রিল ইভিএম পদ্ধতির মাধ্যমে এ আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৮ মার্চ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১৯ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৪ মার্চ।
সময় জার্নাল/এমআই
