নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে পেঁয়াজের বাজার যেনো বছর জুড়েই অস্থির থাকে। কখনও কখনও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও হঠাৎ করেই বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে নিয়ন্ত্রণকারীদের। গত এক সপ্তাহ যাবৎ খুচরা বাজারে ৭৫/৮০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়েছে।
এরই মধ্যে কাঁচা বাজারে আসল সুখবর। এক সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৮টাকা । বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর বাড্ডা কাঁচা বাজার, কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচা বাজার সরেজমিন ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে রাজধানীর কাঁচা বাজারের এমন চিত্র জানা গেছে।
রাজধানীর পাইকারী কাওরান বাজারে দেখা যায়, এখানে ৫০-৫৫ টাকা কেজিতে পাইকারী দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে দেশি ভালো মানের পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আর ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকা কেজিতে। আর ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। তবে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। আর ভারতের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা কেজিতে।
পেঁয়াজ নিয়ে একই প্রভাব পড়েছে রাজধানীর অন্যান্য বাজারগুলোতেও। মহাখালী কাঁচা বাজার করতে আসা মহিবুল হাসান বলেন, এক সপ্তাহে আগে যে পেঁয়াজ কেজি ৭৫ থেকে ৭০ টাকা দিতে হয়েছে আজ নিলাম ৬৫ টাকা করে। আমরা চাই দাম আরও নিচে নেমে আসুক তাহলে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের জন্য একটু ভালো হয়।
কুতুবপুর বানিজ্যলয়ের ব্যবসায়ী মো. নরুল হক বলেন কাল যেটা ৬০টাকা বিক্রি করেছি আজ সেটা সর্বোচ্চ পাইকারী ৫৬ থেকে ৫৭ টাকা বিক্রি করছি। কেজিতে ৭ থেকে ৮টাকা কমেছে। আমদানী বেশী হওয়ায়, বাজারে ক্রেতা কমে যাওয়ায় দাম নিচে নেমে গেছে।
একই সুরে কথা বললেন বাজারের আরেক পেঁয়াজের আড়ৎদার মেসার্স মাতৃ ভাণ্ডার মালিক মো. কালাম শেখ। তিনি বলেন, ৬৫ টাকার পেঁয়াজ আজ কেজিতে ৫৬ - ৫৭ টাকা পাইকারি বিক্রি করছি।
খুচরা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, যে পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি এখন একই পেঁয়াজ ৬৩ থেকে ৬৫ বিক্রি করতে পারছি। দাম নিয়ে তো আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা আড়ৎদারদের কাছে যে দামে কিনি সেই বাজার ধরেই খুচরা বিক্রি করতে হয়। আসলে দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে বাজারে। তাই দাম কিছুটা কমেছে।
গত ২০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। ২০ দিন আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। যদিও দেশে প্রায় পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত থাকার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তার ভাষ্য মতে, মজুত থাকা পেঁয়াজ দিয়ে আরও অন্তত দুই-তিন মাসের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
ভোক্তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। ভারতে বন্যার অজুহাতে পেঁয়াজ আমদানি করেও বাজারে বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে অব্যাহতভাবে বাড়ছে পণ্যটির দাম।
যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এছাড়া পূজার কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি প্রায় বন্ধ। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে।
ফলে বুধবার পর্যন্ত প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৮০-৮৫ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকায়। অথচ ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩৫-৪০ টাকায়।
এমআই