খাদিজা খানম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) সারাদেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সম্মুখে 'সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়' ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের ডীনবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, ইন্সটিটিউটের পরিচালকবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন "আমরা লক্ষ্য করেছি সনাতন ধর্মের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আয়োজনে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ১৩ অক্টোবর থেকে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়াগায় সনাতন ধর্মের শতাধিক উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, শ্লীলতাহানি ও সীমাহীন লুটপাট চলছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন জায়াগায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই’’।
বক্তারা আরো বলেন, "আমরা মনে করি বাঙালি জাতিসত্তার ভিত্তিভূমি নির্মাণে এই দেশের সব ধর্ম, সব মতের মানুষের অবদান রয়েছে। কোন নির্দিষ্ট জনোগোষ্ঠীর উপর বাংরবার হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। এর পূর্বে রামু, নাসিরনগর, শাল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এমন হামলা হলেও যথাযথ বিচার হয়নি। বিচারহীনতা এই সংস্কৃতি এসব সন্ত্রাসকে আরো উৎসাহিত করে। ফলে ধর্মনিরপেক্ষতার উপর এই দেশের যে বৈচিত্র্য বিরাজমান, সেটা ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে। এই দেশ যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই একদল উগ্রবাদীর এহেন কর্মকাণ্ড বহিঃর্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অর্জনকে ম্লান করে দেয়’’।
মানববন্ধনে বক্তারা ৫ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলোঃ-
১. চলমান সন্ত্রাসের যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এরকম গর্হিত অপরাধ করার সুযোগ আর কেউ না পায়।
২. পূর্বে রামু, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার সংঘটিত হামলায় জড়িত সকলের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. হামলার শিকার মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জান-মাল রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করতে হবে। সেই সাথে যদি কোন প্রশাসনিক ব্যক্তি হামলা ঠেকাতে গাফিলতি থাকে তাও খতিয়ে দেখে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সামনের বছরগুলোতে যেন দুর্গোৎসবসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অনুষ্ঠানগুলোতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে।
সময় জার্নাল/এলআর