শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারে আবারও ভয়াবহ নৃশংসতার শঙ্কা

শনিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২১
মিয়ানমারে আবারও ভয়াবহ নৃশংসতার শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে থাকা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার সৈন্য সমাবেশ করায় দেশটিতে ব্যাপক মানবাধিকার বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ সাধারণ পরিষদের কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‌‘মিয়ানমারের এই অংশের লোকজন আরও ব্যাপক নৃশংস অপরাধের ব্যাপারে প্রস্তুত রয়েছেন। আমাদের সবারও প্রস্তুত থাকা উচিত। আমি মরিয়া হয়ে আশা করছি যে, আমার এই আশঙ্কা যেন ভুল হয়।’

স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বলছে, গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানে এক হাজার ১০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার করা হয়েছে ৮ হাজারের বেশি মানুষকে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করেছেন অ্যান্ড্রুস। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার সৈন্য এবং ভারি অস্ত্রশস্ত্র দেশটির অস্থিতিশীল উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি তথ্য পেয়েছেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকার মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধে জড়িত বলে অনুসন্ধানে আলামত পাওয়া গেছে। অ্যান্ড্রুস বলেন, দেশটির জান্তার এই কৌশল ভয়ঙ্করভাবে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর গণহত্যা চালানোর আগের ঘটনাপ্রবাহকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাতেদর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানের মুখে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম ঘর-বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন, পিটিয়ে গুলি করে হত্যা, নারীদের ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এমন নৃশংসতাকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।

অ্যান্ড্রুস মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে অর্থ, অস্ত্র দিয়ে সহায়তা এবং বৈধতা দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে দেশটির বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি ‘বৈশ্বিক চাপের কারণে হয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এর আগে, গত সোমবার মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় বিক্ষোভ করে কারাগারে যাওয়া ৫ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ দেশের জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলন থেকে মিয়ানমারের জান্তাকে বাদ দেওয়ার পর বন্দিদের মুক্তির ঘোষণা আসে। আসিয়ানের সম্মেলন থেকে জান্তা প্রধানকে বাদ দেওয়ার এই ঘটনা দেশটির সামরিক শাসকগোষ্ঠীর জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। 

অ্যান্ড্রুস বলেছেন, জান্তাকে আসন্ন সম্মেলনে স্বাগত জানানো হবে না বলে আসিয়ানের ঘোষণা মূলে আঘাত করেছে। তিনি বলেন, জান্তা-নিয়ন্ত্রিত বাহিনী দেশটির আড়াই লাখ মানুষকে বাস্ত্যুচুত করেছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি নির্যাতনের কারণে অনেকে মারাও গেছেন।

শিশুদের ওপর নির্যাতন চালানোর বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।

সূত্র: এএফপি।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল