নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের শেষাংশে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট (বিএস)-২ নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এটির সিস্টেম ক্রিটিক্যাল ডিজাইন নিয়ে পর্যালোচনা হতে পারে ২০২৪ সালে। সবকিছু ঠিক থাকলে এর উৎক্ষেপণ হতে পারে পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট (বিএস)-২নির্মাণের বিষয়ে এরই মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে।এরই মধ্যে এ স্যাটেলাইট নির্মাণে তিন দেশের চারটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহও প্রকাশ করেছে। ২০১৮ সালে প্রথম মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে বাংলাদেশ। এর ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়টি উৎক্ষেপণেরও পরিকল্পনা নেয়া হয়।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) সূত্রে জানা গিয়েছে, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চায়না গ্রেটওয়াল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন ও ফ্রান্সের এয়ারবাস স্যাটেলাইট নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার রসকসমসের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া সম্প্রতি বিএস-১ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটি নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসসিএল চেয়ারম্যান জানান, দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণের লক্ষ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। করোনার কারণে পরামর্শক নিয়োগ কিছুটা পিছিয়ে গেলেও তাদের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণে বেশ কয়েকটি দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের পরামর্শক নিয়োগ করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারসকে (পিডব্লিউসি) পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পায় পিডব্লিউসি। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সরকারের ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলারের চুক্তি হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কোন স্যাটেলাইটটি উপযোগী, তা পর্যালোচনা করে তিন মাসের মধ্যে বিএসসিএলকে পরামর্শ দেয়ার কথা পিডব্লিউসির।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণে বিভিন্ন দেশ আগ্রহ প্রকাশ করলেও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হতে পারে। সেক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারের মধ্যে জিটুজি চুক্তির আওতায় এটি নির্মাণের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রথম স্যাটেলাইটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস সম্প্রতি বিএস-২ নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও সিইও হার্ভ ডেরি জানান, প্রথম স্যাটেলাইটটি নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত থাকায় দ্বিতীয়টি নির্মাণের সুযোগ দেয়া হলে বেশকিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। এছাড়া প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিনিময় হবে।
২০১৮ সালের ১২ মে বিএস-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশগুলোর তালিকায় অবস্থান করে নেয় বাংলাদেশ। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে।
জানা গিয়েছে, বিএস-২ আর্থ অবজারভেশন (ইও) অথবা হাইব্রিড স্যাটেলাইট হতে পারে। এর আওতাধীন এলাকা হবে বাংলাদেশের স্থলভাগ ও বঙ্গোপসাগর ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল।
সময় জার্নাল/এলআর