স্পোর্টস ডেস্ক: এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের দুরবস্থা নিয়ে পাল্টাপাল্টি সমালোচনার ঝড় বইছেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম, সাবেক ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বোর্ডের সমালোচনা সবকিছুর জবাব দিতে এখন দরকার একটা জয়। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সুপার টুয়েলভে দুটি দলই হেরেছে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ। হারলেই বিদায়, এমন বাস্তবতা মেনে নিয়েই আজ বিকাল ৪টায় শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লড়বে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিন্তু এমন একটা ম্যাচ খেলার আগে কী হচ্ছে তার চেয়ে বরং বলা উচিত কী হচ্ছে না! মাঠের বাইরে সরব সবাই। শ্রীলঙ্কার পর ইংল্যান্ডের কাছেও হেরে দল যখন বিপাকে তখন কি না চোখ বন্ধ করে শুধু খেলায় মন দেওয়ারও সুযোগ নেই। আর মাহমুদউল্লাহদের কোন সিদ্ধান্ত যৌক্তিকও হয়ে উঠছে না।
এই যেমন ম্যাচের আগের দিন, হঠাৎ করেই দল অনুশীলন বাতিল করল। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আছেন দুবাইয়ের ফেস্টিভাল সিটির ক্রাউন প্লাজা হোটেলে। যেখান থেকে শারজাহর মাঠ মিনিট পঁচিশের পথ, অথচ সেখানেই কি না ট্র্যাফিক জ্যামের অজুহাতে গেল না দল!
টানা দুই ম্যাচ হেরে জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ক্রিকেটীয় আলোচনাটা কোথায় যেন দূরে সেরে গেছে। ম্যাচ প্রিভিউতেও মাঠের বাইরের সেই উত্তেজনারই খবর। মাঠের বাইরে অনেক রকম ঘটনা ঘটছে, অনেকেই বলছেন বাইরে এই যে সমালোচনার ঝড় তার জন্য চাপে আছে বাংলাদেশ দল। ক্যারিবীয় পরীক্ষার আগে কতোটা চাপে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা?
এই প্রশ্নের মুখে বৃহস্পতিবার পড়লেন নুরুল হাসান সোহান। জাতীয় দলের এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বলছিলেন, ‘আমরা যখন খারাপ করি, আমাদের সমালোচনা সব সময়ই হয়। আমরাও এটা মনে করি যে সমালোচনা হবে। গঠনমূলক সমালোচনা হওয়াটাও জরুরি। হয়তো আমরা খারাপ করছি। এটা মেনে নিতেই হবে। অনেকবারই এমন হয়েছে যে আমরা খারাপ সময়ে ছিলাম, যেখান থেকে আমরা আবার নিজেরাই ফিরে এসেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপে আরও তিনটা ম্যাচ, এখানে ভালো করতে পারলে ব্যাপারটা ইতিবাচকভাবেই আসবে।’
একটা জয়ই আসলে পাল্টে দিতে পারে এই টালমাটাল পরিবেশ। একইসঙ্গে টিকে থাকবে সেমি ফাইনালের আশাও। দল কী সেমির স্বপ্ন দেখে এখনো? সোহান বলছিলেন, ‘আমাদের টিকে থাকতে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। সবার মনোযোগ এই ম্যাচ নিয়েই। ইনশাআল্লাহ্ কাল যদি ভালোভাবে শুরু এবং শেষ করতে পারি তাহলে হয়তো পরের ম্যাচগুলো সহজ হয়ে যাবে এবং পুরো দল চাঙ্গা হয়ে যাবে। দুই ম্যাচ হেরে অবশ্যই আমরা টুর্নামেন্টে ব্যাকফুটে আছি। বাংলাদেশে থাকতে অনেকেই বলেছি আমাদের আশা সেমিফাইনাল খেলা। জিতলে সেমিতে খেলার আশা টিকে থাকবে।’
কিন্তু জয় তো আর ছেলের হাতের মোয়া নয়! উইন্ডিজ মরন কামড় বসাবে সন্দেহ নেই। টানা দুই ম্যাচ হেরে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা কোণঠাসা। নিকোলাস পুরান জানিয়ে রাখলেন, জয় ছাড়া অন্য ভাবনা মাথাতেই নেই তাদের। উইন্ডিজের এই ক্রিকেটার বলছিলেন, ‘দল হিসেবে আগ্রাসী হতে চাই আমরা। শুক্রবার যখন আমরা মাঠে যাব, পিচ ও কন্ডিশন দেখব, তখন আমরা খেলার একটা পরিকল্পনা সাজাব। যত দ্রুত সম্ভব একটা খুব ভালো সংগ্রহ গড়তে চাইব।’
জানিয়ে রাখলেন শারজাহর মাঠ যেহেতু ছোট, সেটির ফায়দাও নিতে চাইবেন তারা। নিকোলাস পুরান বলেন, ‘আমরা শুধু নিজেদের স্কিল কাজে লাগাতে চাই। যখন সেটি করতে পারব, তখন এমনিতেই ফল আসবে। ছোট বাউন্ডারি বলেই ছক্কা মারতে যাচ্ছি, এটা অবশ্য বলবো না।’
এমনিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা জব্বর খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি দুর্বল এই সংস্করণে। তবে, মুখোমুখি দেখায় ক্যারিবিয়ানদের চেয়ে কিন্তু খুব পিছিয়ে নেই টাইগাররা। মুখোমুখি ১২ দেখায় উইন্ডিজের ৬ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জয় ৫ ম্যাচে।
এমআই