স্পোর্টস ডেস্ক। শেষ ওভারের ঝড়ে বাংলাদেশকে ১৪৩ রানের টার্গেট দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ওভারে ১৯ রান নেয় ক্যারিবিয়ানরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রান করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপের মূলপর্বে দুই ম্যাচ হারের পর প্রথম জয়ের লক্ষ্যে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবার আগে দেয়ালে পিঠ ঠেকে আছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচ জিতে কোনরকমে সেমির আশা দেখতে মরিয়া সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই মেহেদী হাসান মোকাবেলা করলেন ক্যারিবীয় দুই ওপেনার। প্রথম ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে মেহেদী দিয়েছেন মাত্র ৪ রান। ম্যাচে তৃতীয় ওভারেই গেইলকে রান আউট করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান থ্রো'টা সরাসরি লাগলেই আউট হতেন গেইল।
'ইউনিভার্স বস' বাঁচলেও মোস্তাফিজের ওভারে ভাঙলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি। ওভারের শেষ বলে মুশফিকের তালুবন্দী হয়ে ফেরেন এভিন লুইস। ৯ বলে ১ চারে ৬ রান করেন তিনি।
দলীয় স্কোরকার্ডে ৬ রান যোগ হতেইও গেইলকে বোল্ড করলেন মেহেদী। গেইল করেছেন ১০ বলে ৪ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে ১৮ রানে। টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে চতুর্থবার মেহেদীর বলে আউট হলেন গেইল।
পাওয়ারপ্লে'তে ক্যারিবীয়দের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বাংলাদেশ। গেইল ও লুইসকে বিদায় করে পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছে ২৮ রান। বিশ্বকাপে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।
ম্যাচের ৭ম ওভারে মেহেদীর বলে জীবন পান রোস্টন চেজ। ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটার, সহজ সুযোগটা হাতছাড়া করেন মেহেদী। এর পরের বলেই লংঅফে ধরা পড়েছেন শিমরন হেটমায়ার। ৯ রান করে বিদায় নেন এই হার্ড হিটার।
পাওয়ারপ্লে'তে ক্যারিবীয়দের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বাংলাদেশ। গেইল ও লুইসকে বিদায় করে পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছে ২৮ রান। বিশ্বকাপে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।
ম্যাচের ৭ম ওভারে মেহেদীর বলে জীবন পান রোস্টন চেজ। ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটার, সহজ সুযোগটা হাতছাড়া করেন মেহেদী। এর পরের বলেই লংঅফে ধরা পড়েছেন শিমরন হেটমায়ার। ৯ রান করে বিদায় নেন এই হার্ড হিটার।
১৩তম ওভারে আহত হয়ে রিটায়ার্ড আউট হন পোলার্ড (৮)। তাসকিন আহমেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরের বলে রোস্টন চেজের স্ট্রেট ড্রাইভ তাসকিনের পায়ে লেগে নন-স্ট্রাইকের স্টাম্প ভেঙ্গে দিলে শূন্য রানে ফিরতে হয় রাসেলকে। কোনো বল না খেলেই রানআউট তিনি।
সাকিবের ওভারে দারুণ দুটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারলো না বাংলাদেশ। সাকিবের বলে চেজের ক্যাচ ফেলেছেন মেহেদী হাসান। যে কিনা নিজের বলেই এর আগে চেজের ক্যাচ ফেলেছিল। এরপর নিকোলাস পুরানকে স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ নষ্ট করেন লিটন। সাকিবের বলে ক্রিজ ছেড়ে বের হয়েছিলেন, কিন্তু লিটন ধরতে পারেননি।
পুরান-চেজ জুটি যখন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল, তখন দুই সেট ব্যাটসম্যানকেই পরপর দুই বলে ফেরালেন তরুণ শরীফুল ইসলাম। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাঈমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিকোলাস পুরান। ছয়টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২২ বলে ৪০ রানে থামেন তিনি। পরের বলেই রোস্টন চেজের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে তাণ্ডব থামান শরীফুল। ৪৬ বলে ৩৯ রান করেন চেজ।
একাদশে দুইটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। চোটের কারণে ছিটকে গেছেন নুরুল হাসান, তার জায়গায় খেলছেন সৌম্য সরকার। নাসুম আহমেদের জায়গায় বাংলাদেশ খেলাচ্ছে তাসকিন আহমেদকে।
একাদশে দুই পরিবর্তন এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। লেন্ডল সিমন্স ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র বাদ পড়েছেন। দলে এসেছেন রোসটন চেজ ও জেসন হোল্ডার।
বাংলাদেশ একাদশ:
লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ:
এভিন লুইস, ক্রিস গেইল, রসটন চেজ, শিমরন হেটমায়ার, কাইরন পোলার্ড (অধিনায়ক), নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেইন, রবি রামপল।
ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আশানুরূপ। ১২ বারের দেখায় ৬ বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ৫ বার বাংলাদেশ জিতেছে। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দুইবার দেখা হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দুই দলের জয়ই সমান একটি করে।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ও একমাত্র দল হিসেবে দুইবার ট্রফি জিতেছে ক্যারিবীয়রা। আর ট্রফি জেতা তো দূরের কথা, টুর্নামেন্টে কখনো সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি টাইগাররা। র্যাংকিংয়ের হিসাব করলে ১০ নম্বরে আছে উইন্ডিজ। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আছে আট নম্বরে।
মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ ২১১ রান,অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৭ রান। ব্যক্তিগত সর্বোচ তামিমি ইকবালের, ১২ ম্যাচে ২৫৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মারলন স্যামুয়েলস, সাত ম্যাচে ২২৬ রান।
ছক্কার হিসেবে এগিয়ে আছেন মারলন স্যামুয়েলস, সাত ম্যাচে ১৮ ছক্কা। অন্যদিকে বাংলাদেশের লিটন দাস হাঁকিয়েছেন ছয় ম্যাচে ১০ ছক্কা।
এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮৯* রান এভিন লুইসের। অন্যদিকে ৬১ বলে অপরাজিত ৮৮ রান তামিম ইকবালের। বোলিংয়ে এক ইনিংসে ৫ উইকেট করে নিয়েছেন সাকিব ও কিমো পল। ১০ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে শীর্ষে সাকিব। ছয় ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সাকিবের পরে কিমো পল।
সময় জার্নাল/আরইউ