সর্বশেষ সংবাদ
ডা. আফতাব হোসেন :
কে দেবে জবাব?
সরকার জ্বালানী তেল ( ডিজেল ও কেরোসিন) এর মূল্য বাড়িয়েছেন। বাড়াতেই পারেন। কারণও বুঝতে পারছি এবং তা আমার কাছে যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণও মনে হয়। অন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি,। ফলশ্রুতিতে জ্বালানি তেলে সরকারের লোকসান। উপরন্তু পার্শ্ববর্তী দেশে ডিজেলের মূল্য আমাদের প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় ডিজেলের উজান প্রবাহ। গতকালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য ছিল প্রতি লিটার ৬৫ টাকা আর পশ্চিমবঙ্গে ১০১.৫৬ রুপি যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২০ টাকা।
কিন্তু যেটা আমি বুঝতে পারছি না, সেটা হল, সরকারের জ্বালানী বিভাগের নীতি নির্ধারকরা কি জানতেন না যে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ালে পরিবহন খরচও বাড়বে? আর বর্ধিত জ্বালানী মূল্যে পূর্বের ভাড়ায় মানুষ ও পণ্য পরিবহন করতে গেলে পরিবহন মালিকদেরও লোকসান গুনতে হবে? এই সামান্য যুক্তিটুকু বুঝতে তো কারও আইনস্টাইন হওয়া লাগে না।
মুশকিল হল, জনগণের দেয়া নির্বাহী ক্ষমতাবলে সরকার চাইলেই জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়াতে পারে। কারও অনুমতির প্রয়োজন হয় না। অথচ লোকসান এড়াতে ভাড়া বাড়ানোর জন্য পরিবহন মালিকদের সরকারের (বি আর টি এ) অনুমতি লাগে। সেমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার বি আর টি এর সাথে পরিবহন মালিকদের আলোচনা হওয়ারও কথা ছিল। কোনও এক দুর্বোধ্য কারণে সে আলোচনা পিছিয়ে রবিবার বিকেলে নেয়া হয়েছে।
সে আলোচনার জন্য দুইদিন অপেক্ষা না করেই ভাড়া বাড়ানোর দাবীতে আজ শুক্রবার থেকে পরিবহন মালিকরা বিনা নোটিশে সাড়া দেশে শুরু করেছেন ধর্মঘট। যেন ধর্মঘট না করলে বাংলাদেশে কোনও সমস্যার সমাধান হবে না। মাঝখানে বলির পাঠা হল সাধারণ জনগণ। আজ ২৭টা চাকরির ও ৭ টা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা ছিল। চরম ভোগান্তির শিকার হল চাকরি প্রার্থী, ভর্তিচ্ছু ছাত্র ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা। যারা ঢাকার বাইরে থেকে এসে পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল, তারা তো আসতেই পারল না। কত মানুষ জরুরী কাজে শহরে আসতে পারল না কিংবা যারা এসেছিল, তারা ফিরে যেতে পারল না। এর দায় কে নেবে? সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা? নাকি পরিবহন মালিকরা? তারা তো একে অন্যের উপর দায় চাপিয়েই খালাস !
এখানে উল্লেখ না করলেই নয়, পত্রিকায় দেখলাম, বি আর টি এর চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন, তাঁর বিশ্বাস, পরিবহণ বাস চলাচল “স্বাভাবিক থাকবে” ! কোন গ্রহে বাস করেন তিনি? তিনি কি বাংলাদেশের দাবি আদায়ের কালচার জানেন না? আর যদি জানেনই, তাহলে আলোচনা পিছানো হল কেন?
আবার দেখলাম, মাননীয় সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী মহোদয় পরীক্ষার্থী ও জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন। খুবই সময়োপযোগী আহবান। মন্ত্রী মহোদয় যথেষ্ট অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তিনিও কি ধারনা করেননি যে এমনটা হতে পারে? তাহলে আগেই হস্তক্ষেপ করলেন না কেন?
ওদিকে, লঞ্চ মালিকরাই বা বসে থাকবে কেন? তারাও ভাড়া দ্বিগুণ করার হুমকি দিয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে। নইলে ধর্মঘট !
আমি বুঝতে পারি না, সমস্যা তৈরি করে কেন সমাধানের জন্য আলোচনার টেবিলে বসতে হবে? যাতে সমস্যা তৈরি না হয়, তার জন্য কেন আগে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না? কেন এত সমন্বয়হীনতা?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ সব প্রশ্ন করার অধিকার আমার আছে। কিন্তু কার কাছে করব? কে দেবে এর জবাব?
@ আফতাব হোসেন।
৫ নভেম্বর। খুলনা।
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল