এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিন গোয়াল ঘরে থাকার পর অবশেষে বৃদ্ধা মায়ের ঠাই হলো ছেলের ঘরে। পরিত্যক্ত ঘরে গরু-ছাগলের সাথে ঘরের এক কোনায় দীর্ঘদিন প্রায় দুই বছর ধরে অবহেলা,অযত্নে পড়ে ছিলেন ফুলজান নেছা (৮০)। জাগ্রত বিবেক নামের একটি সামাজিক সংগঠনের হস্তক্ষেপে রবিবার (৭ নভেম্বর) রাতে অসহায় বিধবাকে ঘরে তুলে নেয় তার ছেলে ও পরিবার।
জানাগেছে, ফরিদপুর সদরের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কোমরপুর এলাকার বাসিন্দা ফুলজান বেগমের স্বামী হানিফ মন্ডল মারা গেছেন আরো কয়েক বছর আগে। এখন আপন বলতে একমাত্র ছেলে, ছেলের বউ ও তিন নাতনি। নানা রোগশোক বাসা বেঁধেছে ফুলজানের শরীরে। বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। বিছানায় শুয়ে-বসেই সব করতে হয় তাকে। ছেলে দেলোয়ার মন্ডল স্থানীয় বাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে কাচামালের দোকানদার।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য(মেম্বার) জাহাঙ্গীর মন্ডল বলেন, ফুলজান বেগম নিজের কাঁধে ঝুড়িতে করে মাটি কেটে যে বসত ভিটা বেঁধেছিলেন সেই ভিটায় দুটি পাকা ঘর থাকতেও তার ঠাই হলো পরিত্যক্ত ঘরে। বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি আরও বলেন, পরিত্যাক্ত ঘরের তিনটি রুম, প্রথম টায় গাভী আর দুটি ছাগল থাকে,দ্বিতীয় রুমে শুকনা কাঠ-খড়িতে ঠাসা। তৃতীয় আরেকটি রুমে হতভাগিনী ফুলজান নেছা থাকতেন। ফুলজান বেগমের প্রসাব পায়খানা, খাওয়া-দাওয়া ঘুমানো সব কিছুই চলতো এক বিছানায়।
স্থানীয় দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জাগ্রত বিবেক নামক স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের প্রধান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অসহায় বিধবা ফুলজান বেগমকে গোহাল ঘরে ফেলে রাখা হয়। সামাজিক সংগঠন জাগ্রত বিবেকের সদস্যদের মাধ্যমে রবিবার সকালে জানতে পেরে ফুলজান বেগমের ছেলে দেলোয়ার মন্ডলকে দ্রুত তার মাকে তাদের সঙ্গে পাকা ঘরে রাখার জন্য বলা হয়। সে মোতাবেক রবিবার (৭ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে দেলোয়ারের মাধ্যমে তার মাকে ঘরে তুলে দেওয়া হয়।
সময় জার্নাল/এলআর