সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যার কারণে অনেক সময় মানুষ অন্ধ হয়ে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে যায়, হার্ট, কিডনী, লিভারসহ রোগীরা বিভিন্ন জটিলতায় ভোগেন। তবে মানুষ সচেতন হলে এই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলেও নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব। রোববার (১৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকে অডিটোরিয়ামে এন্ডোক্রাইনোলজি (ডায়বেটিস এন্ড হরমোন) বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০২১ উপলক্ষে ডায়াবেটিসের জনসচেতনতামূলক শিক্ষা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
সেমিনারে স্নায়বিক জটিলতা নির্ণয় ও চিকিৎসা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, অসংখ্য ডায়াবেটিসের রোগী স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত। এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহাজাদা সেলিম উল্লেখ করেন, পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডায়বেটিসের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি, শনাক্ত ছাড়া রোগীর সংখ্যাও অনেক ৬৮ শতাংশ তাই ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সমন্বিত কর্মকান্ড জোরদার করতে হবে। গাইনোকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর সঠিক পরিচর্যা জরুরি।
সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ।
বক্ষব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আবুল হাসানাত, অবস এন্ড গাইনী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরীন প্রমুখ। সেমিানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে ডায়াবেটিসের স্নায়বিক জটিলতা প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রায় অর্ধেক টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর নিউরোপ্যাথি তথা পেরিফেরাল স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা হচ্ছে ডায়াবেটিসের সর্বাধিক সংঘটিত জটিলতা। তবে প্রথম দিকে উপসর্গ প্রকাশ নাও হতে পারে অথবা হাত-পা ঝিনঝিন করতে পারে বা অসাড় হতে পারে। পরবর্তীতে হাত-পা দুর্বল বা অবশ হতে পারে। পায়ে ক্ষত হতে পারে। চোখের দৃষ্টি সমস্যা হয় চল্লিশোর্ধ্ব ৩ জন ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে একজনের রেটিনোপ্যাথি দেখা দেয়। এতে চোখের পেছনের আলোক সংবেদনশীল টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অটোনোমাস নিউরোপ্যাথি হতে পারে যার ফলে হজমে সমস্যা, রক্তচাপ কমা, অসংযম হওয়া, অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে এবং ব্যথার উপলব্ধি হ্রাস পেতে পারে। যেকোনো নিউরোপ্যাথি হতে পারে যার ফলে উরুর ব্যথা, পীঠের নীচে প্রচন্ড ব্যাথা, বুকের ব্যথা যা একটি হার্ট এটাকের লক্ষণও হতে পারে। কানে শোনার সমস্যাও হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিসের ফলে ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে। হঠাৎ সুগার খুব বেশী বেড়ে গেলে অথবা বেশী কমে গেলে অজ্ঞান, খিঁচুনী, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই জটিলতা রোধে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের সাথে সাথে ওজন কমানো, কম ক্যালোরি খাওয়া, শারীরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করা অবশ্যই প্রয়োজন।
সময় জার্নাল/ইএইচ