সময় জার্নাল প্রতিবেদক : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআইর সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এখনো করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। এই মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে ব্যবসায়ীরা সমস্যার মধ্যে পড়বে।
বৃহস্পতিবার এফবিবিসিআই’র নিজস্ব ভবনে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে এফবিবিসিআই’র নেতৃত্বে বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফরের ওপর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় জসিম উদ্দিন বলেন, তেলের দাম কম থাকা অবস্থায় ব্যবসায়ীরা যেসব কাজ হাতে নিয়েছে তার খরচ এখন বেড়ে যাবে। এতে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। এ কারণে তেলের দাম ডলারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করা উচিৎ। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমবে তখন বাংলাদেশেও কমবে। যখন বাড়বে তখন বাংলাদেশেও বাড়বে। কিন্তু একসঙ্গে তেলের দাম ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আমাদের এখানে কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে আর কমনো হয় না। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে, সামনে আরও কমবে। তাই বাংলাদেশের বাজারে তেলের দাম কমানো দরকার।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ এখন সময়ের দাবি। আগে আমরা শুধু তৈরি পোশাক শিল্পের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত ছিলাম। এখন আমরা লেদার, জাহাজ, সিরামিকসসহ অন্যান্য পণ্যও রপ্তানি করছি। এই বাজার আরও বাড়াতে হবে। না হলে আগামীর বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, বিদেশি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশকে তাদের মার্কেট মনে করতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরে আমরা ৬টি বাণিজ্য চুক্তি করেছি। ইউকে মার্কেট ও ফ্রান্স মার্কেটে আগামীতে আমাদের বাণিজ্য আরও বাড়বে। এছাড়া আমরা বিদেশে অবস্থানরত দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশিদের আমাদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছি। তারাই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ে নেতৃত্ব দেবে।
জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার। বাণিজ্য ঝুঁকি মোকাবিলা করতে আমাদের এটাকে ৩০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পাবে বলেও মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর যদি ২০২৯ সালের পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা বা জিএসপি সুবিধা পাই তবে আমরা বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ নিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, করোনার প্রভাবের কারণে খেলাপি ঋণ কিছুটা বেড়েছে। আমাদের ব্যবসায় ঝুঁকির মধ্যে আছে। তবে আগামী বছরের মধ্যেই আমরা তা ছাড়িয়ে আসতে পারবো। ৯৯ শতাংশ ব্যবসায়ীই লোন নিয়ে তা পরিশোধ করে দেয়ার মনোভাব রাখে। এক শতাংশ ব্যবসায়ী আছে যারা বিভিন্ন প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। তবে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা সরকারের সাথে কাজ করছি। কারণ ব্যাংকিং খাত আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখছে। বিশেষ করে পাওয়ার সেক্টরে যেসব উন্নয়নগুলো হয়েছে সেগুলো কিন্তু বেশিরভাগই দেশিয় ব্যাংকের লোনের মাধ্যমে হয়েছে।
সময় জার্নাল/এসএ