স্পোর্টস ডেস্ক: দলীয় সংগ্রহ ৫০ ছোঁয়ার আগেই নেই ৪ উইকেট। প্রচণ্ড চাপে পড়ে যাওয়া দলকে টেনে তুললেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ভুলে দুজনেই ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটালেন। লিটন তো পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখাও। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মাঠ ছাড়লেন মুশফিকও। লিটন ও মুশফিকের দুর্দান্ত জুটিতে ভর করে প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রানের সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও বেশিক্ষণ থিতু হনে পারেননি সাইফ হাসান। পঞ্চম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বাউন্সারে বল নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পেরে উইকেট হারান এই ওপেনার। ব্যক্তিগত ১৪ রান করে সাঝঘরে ফেরেন তিনি। সাইফের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। হাসান আলির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ব্যক্তিগত ১৪ রানে বিদায় নেন তিনি।
ব্যাট করতে নেমে ইনিংস বাড়াতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক মুমিনুল হকও। সাজিদ খানের বলে ব্যক্তিগত ৬ রানে উইকেট হারান তিনি। তিনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ফাহিম আশরাফের বলে সাজিদ খানের হাতে ক্যাচ তুলে ব্যক্তিগত ১৪ রানে উইকেট হারান তিনি।
চার উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন মাঠে নেমে লিটনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন মুশফিক। ব্যাট হাতে থিতু হয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন এই দুই ব্যাটার। এর মাঝে লিটন ক্যারিয়ারের ১০ম টেস্ট ফিফটি তুলে নেন ৯৫ বলে। আর মুশফিক ক্যারিয়ারের ২৪তম ফিফটি তুলে নেন ১০৮ বল খেলে, ৮ বাউন্ডারিতে।
ফিফটি ছোঁয়ার পর শাহিন আফ্রিদির বলে ব্যক্তিগত ৬৭ রানে একবার জীবন পান লিটন। এরপর ফের ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটান তিনি। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ১৫০-এর বেশি, যা চট্টগ্রামের মাটিতে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। পরে এই জুটিতে ২০০-এর বেশি রান আসে।
এদিকে দারুণ ইনিংস খেলার পথে মুশফিক বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক বনে গেছেন। এতদিন ৩৭ ম্যাচের ৭০ ইনিংসে ২৬২০ রান নিয়ে তালিকার শীর্ষে ছিলেন তামিম ইকবাল। মুশফিক তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ৪৪ ম্যাচের ৭৮তম ইনিংসে। ২৫৪৫ রান নিতে তালিকার তিনে আছেন সাকিব আল হাসান।
মুশফিকের রেকর্ডের পর লিটন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে হাঁটতে শুরু করেন। এর আগে তার সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর ছিল ৯৫ রান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আজ ক্যারিয়ারের ১০ম ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন তিনি। খেলেন ১৯৯ বল। বাউন্ডারি হাঁকান ১০টি, ছক্কা ১টি। এর মাধ্যমে সেঞ্চুরিবিহীন সবচেয়ে বেশি ফিফটির মালিকদের তালিকা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন তিনি।
আলোক স্বল্পতায় ৮৫ ওভারেই প্রথম দিনের খেলা শেষ হলে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন মুশফিক ও লিটন। ২২৫ বলে ১১৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন লিটন এবং মুশফিক (৮২*) সেঞ্চুরির প্রত্যাশায় দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন।
এমআই