নিজস্ব প্রতিবেদক: এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কথা বিবেচনা করে বৃহস্পতিবারের (২ ডিসেম্বর) কর্মসূচি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কাল দুপুর ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ওপর তারা ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করবেন তারা। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ১১ দফা দাবি সংবলিত নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর একটার দিকে রামপুরায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যেন কষ্ট না হয় এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনও সচল থাকে, সেই লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সব শিক্ষার্থীকে এই সময়ে রামপুরা ব্রিজে উপস্থিত থাকারও জন্যও তারা আহ্বান জানান।
এদিকে, ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশের গণপরিবহণের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস চালু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ারও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এই সময় তারা ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নতুন ১১ দফা হলো
১. সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাঈনউদ্দিনের হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
২. সারাদেশে সব গণপরিবহণে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফ পাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করা যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাস বাড়াতে হবে।
৩. গণপরিবহণে ছাত্র-ছাত্রী ও নারীদের অবাধ যাত্রা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ফিটনেস ও লাইসেন্স বিহীন গাড়ি ও লাইসেন্স বিহীন ড্রাইভার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএ-এর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
গাড়ি ভাঙচুর না করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীরগাড়ি ভাঙচুর না করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৫. সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় সব পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুয়ায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।
৭. শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক বাস দেওয়ার বদলে টিকিট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন ড্রাইভার ও ২ জন হেলপার রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
‘পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?’‘পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?’
৯. যাত্রী-পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের অভিমত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে। এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
১০. ট্রাক,ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২ টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করে দিতে হবে।
১১. মাদকাসক্তি নিরসনে গোটা সমাজজুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ড্রাইভার-হেল্পারদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্টে ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
এমআই