আমরা এখনো —
যে যার নিজের দুঃখে ডুবে আছি।
আমাদের ঘরদোর, তামাম জায়গা-জমি,
কাঁটা ঝোপ, কচু ক্ষেত, শ্যাওলা জমানো ঘাট,
হতাশার আয়নায় প্রতিচ্ছবি দেখে।
আমাদের আঙিনায় শুকনো পাতার রাশি,
কখন বোঝাই হয়, কখন সে উড়ে যায় বুনো বাতাসে,
কে বা সে খোঁজ রাখে?
উঠোনের এক কোণে এক মুঠো মুড়ো ঝাঁটা,
নিজেও জানেনা কবে নিল অবসর।
দরজার ছিটকিনি আধভাঙা হয়ে আছে,
সিংহ দরজা আছে, সিংহ উধাও।
অথচ আমরা এখনো —
যে যার নিজের দুঃখে ডুবে আছি।
কতকাল কেটে গেলো শিউলি গাছের তলে,
বুনো ঘাসে, বুনো হাঁসে বাসা বেঁধে আছে,
কখন শরৎ আসে, কখন শিউলি হাসে,
সে খবর চাপা থাকে হিসাবের খাতে।
ধানের গোলায় আজ গোখরোর সংসার,
অন্দর অবারিত শূন্য মাঠের মতো,
হু হু করে বয়ে যায় জঙলা বাতাস,
বয়ে যায়, ধেয়ে যায়, কাত হয়ে পড়ে থাকা জানালার খাঁজে।
দহলিজে তাকিয়াটা, না তাকানো দশা আজ,
পায়া ভেঙে হয়ে আছে উঁইয়ের খাবার,
ন্যায়বিচারের সভা এ দালানে দুস্তর,
বিচারের বানী আছে, ন্যায়টা উধাও।
অথচ আমরা এখনো —
যে যার নিজের দুঃখে ডুবে আছি।
আমরা এখনো একজন জমির দালালকে খুঁজছি।
সন্ধ্যা হতেই আসে ঝিঁঝিঁদের কাতরানি,
ঘরে-দোরে, ঘোরে, ফেরে শেয়ালের দল,
দোতলার কার্ণিশে বিছুটি লতার ঝাঁক,
ঝুলে থাকে দালানের মালার মতো।
তবু —
এখনো তাকাই যদি একবার পিছু ফিরে,
এখনো দাঁড়াই যদি মাথা উঁচু করে,
আবার আবাদ হবে বিরান এ প্রান্তর,
অন্দর হয়ে যাবে রানীর মতো।
সাহসে দাঁড়াই যদি হাতগুলো এক করে,
ন্যায়বিচারের সভা বসবে আবার।
সময় জার্নাল/এসএ