সর্বশেষ সংবাদ
ইতিহাস গড়লেন কর্ণেল ডা. শরমিন :
সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
এই প্রথম বাংলাদেশে ঢাকা সিএমএইচ এর কমান্ড্যান্ট এর নেতৃত্বে ৩০ নভেম্বর সিএমএইচ ঢাকার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারে শিশু রক্ত ও ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ কর্নেল শরমিন আরা ফেরদৌসী ও তার টিম এর তত্ত্বাবধানে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া ও অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন চিকিৎসায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ফলে বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় এক নতুন আশার দুয়ার উন্মোচিত হলো। এখন থেকে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অর্ধেক খরচে এই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট উপলক্ষে বুধবার (০১-১২-২০২১) ঢাকা সেনানিবাসস্থ সিএমএইচ-এ থ্যালাসেমিয়া রোগীর এ্যালোজেনিক অস্তিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তর এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান, এফসিপিএস।সেমিনারে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের ব্যাঙ্গালোর সিএমআই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন কনসালটেন্ট ডা. স্টালিন রাম প্রকাশ (Dr. Stalin Ramprakash)| এছাড়াও উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
এই চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি যুগান্তকারী পক্ষক্ষেপ গ্রহণ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকারকৃত চিকিৎসা সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টা দেশকে আরও এক ধাপ উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। থ্যালাসেমিয়া একটি শিশুদের জন্মগত রক্তের ভাঙ্গন জনিত রোগ, যে রোগে রক্তে লোহিত কনিকা পরিণত বয়স হওয়ার পূর্বেই ভেঙ্গে যায়। যার কারণে আক্রান্ত শিশু/ব্যক্তি রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন। এই রক্ত স্বল্পতা এতই মারাত্মক হতে পারে যে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়মিত মাসিক অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহ পর পর রক্ত দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়।
বাংলাদেশের প্রায় ০৭% জনগণ এই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক এবং প্রতি বছর প্রায় ৭০০০ জন নতুন শিশু এই রোগ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করছে। একটি শিশুর মধ্যে সাধারণতঃ ১-৩ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। একটি আক্রান্ত শিশু সাধারণতঃ রক্ত স্বল্পতা/ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া জন্ডিস, ঘন ঘন বিভিন্ন ইনফেকশন হওয়া, দুর্বলতা ও অপুষ্টি এই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে। এই রোগের চিকিৎসা হলো নিয়মিত রোগীকে রক্ত প্রদান করা এবং রক্তভেঙ্গে যাওয়ার জন্য শরীরে যে আয়রন জমা হচ্ছে তা নিঃসরনের ব্যবস্হা গ্রহণ করা। এই চিকিৎসা একটা রোগীর জন্য যথাযথ নয় এবং এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রায় ২০০ জন শিশু এই রোগের জন্য থ্যালাসেমিয়া সেন্টারে নিবন্ধিত আছে। এই রোগীদের মাসিক হারে অথবা কেউ কেউ সময়ে নিয়মিত রক্ত প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হচ্ছে। নিয়মিত রক্ত প্রদান ও রক্ত ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে শরীরে যে প্রচুর পরিমান আয়রন জমা হয় সে আয়রন নিঃসরন করার জন্য যে চিকিৎসা প্রদান করতে হয় তা ব্যয়বহুল এবং মাঝে মাঝে এই ঔষধের অপ্রতুলতাও দেখা দেয়।
এই রোগের চুড়ান্ত ও নিশ্চিত চিকিৎসা হলো অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা। এই ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীর সহোদর ভাই অথবা বোনের থেকে অস্থিমজ্জা নিয়ে তা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই চিকিৎসার ফলে রোগীর শরীরে নতুনভাবে উৎপাদিত রক্ত আর ভেঙ্গে যায় না এবং রোগীকে আর রক্ত প্রদান করতে হয় না। যার ফলে সে আর এক জন সুস্থ বাচ্চার মত জীবন যাপন করতে পারে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা যায়, যার জন্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোন সেন্টারে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়নি।
সময় জার্নাল/ইএইচ
এ বিভাগের আরো
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল