চোখ বুজবার আগে
শুধু একবার সিজদাহ্ দিতে চাই,
আত্মসমর্পণের সমস্ত অনুভূতি নিয়ে।
নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই,
মহাপরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমানের সম্মুখে।
গুপ্ত পাপের রাশি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে,
আবেগের সমুদ্র মন্থন করে।
হাহাকার করে ওঠে কলুষিত আত্মাটি,
মাথার ভেতর যেন বিদ্রোহ ঘটে,
আছড়ে পড়তে চায় পশ্চিমমুখী হয়ে,
করুণ আর্তনাদে আত্মা শোনায় কানে,
শুধু একবার সিজদাহ্ দিতে চাই,
মহাপরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমানের সম্মুখে।
দৈহিক কাঠামোটা চিরকালই অবাধ্য,
কখনো শোনেনি সে বিবেকের কথা,
বিবেক কেবলই ছিলো যাত্রার সঙ হয়ে,
মহাপাতকের মতো নিগৃহীত।
চেতনার নাভি হতে সুক্ষ্ম ধোঁয়ার মতো,
ক্রমশ উঠতে থাকে বোধের সুবাস।
বয়সী বটের মতো দেহটা জড়িয়ে এলে,
মিটে যায় অহমিকা, ঔদ্ধত্যের শ্বাস।
পার হয়ে আসা পথে চোখ খুলে চাইলেই,
আতংকে শিহরিত আত্মাটা বলে ওঠে,
শুধু একবার সিজদাহ্ দিতে চাই,
মহাপরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমানের সম্মুখে।
সকল সম্মানের কেন্দ্রবিন্দু তিনি,
সকল ক্ষমতা তাঁরই আধিপত্যে,
তিনি চাইলেই আমি ধ্বংস হয়ে যেতাম,
অপদস্ত হতে পারতো সমস্ত বিদ্রোহ, অহংকার,
তিল তিল করে গড়া সামাজিক মর্যাদা।
তিনি চাইলেই আমি আর মানুষ হতাম না।
অথচ তিনি শুধু সুযোগ দিয়েই গেছেন
অথবা নিতান্ত অবহেলায় উপেক্ষা।
তবু্ও যখন আমি সুযোগ পেয়েই গেছি,
চোখ বুজবার আগে,
সর্বাঙ্গ লুটিয়ে গড়িয়ে পড়তে চাই,
কাবার প্রভুর কাছে সিজদাহ্ দিতে চাই,
একবার সে সিজদাহ্ পৌঁছাতে চাই,
ঐ আরশের কাছে।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৬ ডিসেম্বর ২০২১।