কি ভিষণ দায়!
মানুষের নিঃশ্বাস বিষাক্ত,
নাকি স্যাঁতসেঁতে অপবিত্র?
মানুষের স্পর্শ নৃশংস,
নাকি বিশ্বাস ভেদে তা আলাদা?
কারও কারও নিঃশ্বাস দেবতার কাছে নাকি অসহ্য,
মানব স্পর্শে দেবতার পূজা হয় লাঞ্ছিত!
সুপ্রাচীন প্রশ্নটা আজ আবার ফিরে এলো
রোজকার বেচাকেনা বাজারের ফাঁকে।
আমি তখন মাসকাবারি ফর্দ নিয়ে ব্যাস্ত মুদী দোকানে।
তক্ষুনি সে এলো,
দেবতার পূজারী সে সম্মানিত,
ধুপকাঠি চেয়েছিলো দোকানীর কাছে।
সুগন্ধ বরাবর মনটাকে টানে।
সে টানে কখন যেন শুঁকে নিয়েছি,
দু'হাতে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়েছি।
পূজারীর বিমর্ষ, ত্রাসে ভরা মুখ,
দেবতার অভিশাপ কোপের অনল
যদি তাকে ধরে ফেলে,
কি ভিষণ দায়!
বিস্ময়ে, অপমানে কাষ্ঠ হেসে বললাম,
ও মশাই আপডেট হও,
বিশ্বাসটাকে ফের বুঝে - শুনে নাও।
মানুষের ছোঁয়া যদি এতোই আপদ,
এমন দেবতা থেকে পরিত্রাণ চাও,
স্রস্টা সবার তিনি, সার্বজনীন,
তাঁর কাছে জাত-পাত ভেদাভেদ মিছে,
যে জ্ঞান তোমাকে করে সংকুচিত,
মানবিকতার মহা মাপকাঠিতে,
একবার তাকে তুমি যাচাই করো।
বেচারা সে বিব্রত, অপারগ হয়ে, আচার আর গোঁড়ামির গাইছে সাফাই,
আমার অপমান তাকে ছুঁয়ে গেলো বলে,
মাথা নিচু করে শুধু ক্ষমা চেয়ে যায়।
ক্ষমা করলাম তাকে অন্তর থেকে,
ক্ষমা করলাম সেই ধর্মান্ধকে।
আমার ধর্মগুরু রাসুল যিনি,
ক্ষমা করতে ভারি ভালোবাসতেন।
আমার শিক্ষকের শিক্ষা এমন,
পূজারীর ক্ষুদ্রতা ক্ষমা পেয়ে যায়।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
১১ ডিসেম্বর ২০২১।