সময় জার্নাল প্রতিবেদক : বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক) এর জন্ম কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চৌসই গ্রামে। জন্ম ১৯৫১ সালের ১১ এপ্রিল। বাবা কাজী আবদুল মুত্তালিব। মা কাজী নূরুন্নাহার বেগম।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির ১৯৬৯ সালের শেষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাকুল সামরিক অ্যাকাডেমিতে সিনিয়র ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আগস্ট মাসের শেষে তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে এসে যুদ্ধে যোগ দেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সিলেট অঞ্চলে ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীকে সংগঠিত করেন। আগস্ট মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন সাজ্জাদ আলী জহির। পোস্টিং হয় ৭৮ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্ট শিয়ালকোটে। কয়েক দিন পর সেখান থেকে পালিয়ে ভারতে যান। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন সেপ্টম্বর মাসে। এ সময় ভারত সরকার মুক্তিবাহিনীকে কয়েকটি ১০৫ এমএম গান দেয়। তা দিয়ে মুক্তিবাহিনীর জন্য একটি ফিল্ড আর্টিলারি ব্যাটারি গঠন করা হয়। এর নাম দেওয়া হয় রওশন আরা ব্যাটারি। এই ব্যাটারিতে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। এ গ্রুপের সহঅধিনায়ক ছিলেন তিনি। রওশন আরা ব্যাটারিতে ছিল ছয়টি গান। অক্টোবর মাস থেকে এই ব্যাটারি ১০৫ এমএম কামান দিয়ে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সকে বিভিন্ন যুদ্ধে আর্টিলারি ফায়ার সাপোর্ট দিয়ে সহায়তা করে। সাজ্জাদ জহিরের পরিচালনায় রওশন আরা ব্যাটারি কয়েকবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানে গোলাবর্ষণ করে। সঠিক নিশানায় গোলাবর্ষণ করার ক্ষেত্রে তিনি যথেষ্ট কৃতিত্ব ও দক্ষতা প্রদর্শন করেন। এর ফলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পুরস্কার ও সম্মাননা স্বরুপ কাজী সাজ্জাদ আলী জহির স্বাধীনতা পরবর্তী বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি স্বাধীনতা পদক ২০১৩ ও পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন ২০২১ সালে। চাকুরি জীবনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য বিষয়ে তার একাধিক প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে।
সময় জার্নাল/ইম