একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ছয় ডজনের বেশি নতুন দল নিবন্ধন চাইলেও তাদের কারও তা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
নিবন্ধন: ঝরে গেল আরও ৮ দল
নিবন্ধন: নতুন দলের আবেদন পর্যালোচনা শুরু
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল, এখন তো দেখি নিবন্ধনযোগ্য দল পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। হয় একজন নেতা আছেন, কোনো অফিস নেই, গঠনতন্ত্র ঠিক নেই…।”
২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুর পর ৩৮টি দল নিবন্ধিত হয়। এরপর নবম সংসদে দুটি এবং দশম সংসদে দুটি দল নিবন্ধন পায়। এছাড়া শর্ত পূরণ না হওয়ায় দুটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে, যারা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারে।
একাদশ সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চাইলে মোট ৭৬টি দল আবেদন করে। এর মধ্যে ১৯টি দল প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ যায়। ইসির তাগিদের পরও নথিপত্র না দেওয়ায় ঝরে পড়ে আরও আটটি দল।
বাকি ৪৯টি দলের আবেদন পর্যালোচনার কাজ চলে পুরো মে মাস জুড়ে। ইসির নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটির চারটি উপ-কমিটি এসব দলের গঠনতন্ত্র, দলিলপত্র ও আনুষাঙ্গিক উপাত্ত যাচাই করে দেখে।
ইসির উপ সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অধিকাংশ দলের কাগজপত্রই ঠিক নেই। আমার ভাগে যে দলগুলো ছিল, তাদের কোনটিই নিবন্ধনযোগ্য বলে সুপারিশ করতে পারিনি।
নিবন্ধন কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইসির উপ সচিব আব্দুল হালিম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কাজ গুছিয়ে রেখেছি। কমিশনের অনুমোদন পেলেই কয়েকদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে পারব।”
সংসদ নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগে নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করার পরিকল্পনার কথা এর আগে জানিয়েছিল ইসি। সেক্ষেত্রে এ সপ্তাহেই নিবন্ধন অযোগ্য দলগুলোকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দিতে হবে। কোনো দল নিবন্ধনযোগ্য হলে সে বিষয়ে আপত্তি নিষ্পত্তি করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে ইসিকে।
সিইসি ও চার জন নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে কেউ কোনো দলের বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ইসি সচিবালয়ের নিবন্ধন বাছাই কমিটি ইতোমধ্যে নিবন্ধন অযোগ্য দলগুলোকে পাঠানোর জন্য একটি চিঠির খসড়া তৈরি করেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দল প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে।
এ বছরের শেষ ভাগে ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। ৩০ জুলাই তিন সিটি নির্বাচনের পর থেকে সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হবে পুরোদমে।