ওমিক্রন, ডেল্টার মত মারাত্মক না হলেও অনেক বেশী সংক্রামক। বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভ্যারিয়েন্টটি।আমাদের দেশে করোনার পাশাপাশি অন্যান্য ঠান্ডা-জ্বরের ভাইরাস বিরাজ করছে। বেশীরভাগ মানুষ সর্দি, কাশিতে ভুগছেন। ফলে করোনা আক্রান্ত বা অনাক্রান্ত এমন মানুষ খুঁজে বের করা খুব কঠিন।
ওমিক্রন আমাদের শ্বাসতন্ত্রের উপরের অংশে আর ডেল্টা নীচের অংশে অর্থাৎ ফুসফুসে সংক্রমন ঘটায়। ফলে ডেল্টা মারাত্মক কোভিড-১৯ রোগ সৃষ্টি করে।
ডেল্টার সাথে ওমিক্রনের উপসর্গের কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেহেতু এখন দুটি ভ্যারিয়েন্টেই সার্কুলেট করছে, তাই উপসর্গ গুলো জানা খুব জরুরী
🧿 ডেল্টা সংক্রমনে শুষ্ক কাশি হয়, যা ওমিক্রনে হয়না৷ বরং ওমিক্রনে গলা ব্যাথা হবে। আক্রান্তের মনে হবে গলার ভেতরটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে।
🧿 ডেল্টাতে ঘ্রানশক্তি ও স্বাদ কমে যায়, ওমিক্রনে যা হয়না। বরং ওমিক্রনে প্রচন্ড শরীর ব্যথা হয়, বিশেষ করে কোমর থেকে শরীরের নীচের অংশে।
🧿 ওমিক্রনে রোগীর নাক বন্ধ থাকে, যা ডেল্টাতে থাকে না
🧿 ওমিক্রনে উচ্চমাত্রায় জ্বর থাকে, আর ডেল্টাতে গায়ে গায়ে জ্বর( থার্মোমিটারে ৯৯ থেকে ১০০)
তাহলে ওমিক্রনকে নিয়ে এত চিন্তা কেন?
ওমিক্রন, ডেল্টার চেয়ে ৫-৬ গুন বেশী সংক্রামক। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের শরীরে আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ধরুন, ১০০ জন ডেল্টাতে আক্রান্ত হলে ৫ জনের মাঝারি থেকে মারাত্মক কোভিড হয়। । ১০০ জন ডেল্টা =৫০০ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত। যদি ওমিক্রনে মাঝারি থেকে মারাত্মক কোভিডে আক্রান্তের হার ১%ও হয় তাহলেও ডেল্টার মত ৫ জনই হবে৷ ফল হার কমে গেলেও সংখ্যা একই থাকবে। আমাদের সংখ্যার কথাটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে৷
তবে, আশার কথা বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩২% এর পূর্ণ ডোজ ভ্যাক্সিন দেয়া হয়ে গেছে। অনেকেরই ন্যাচারাল ইনফেকশন হয়ে গেছে আগে।
পরিশেষে, যে ভ্যারিয়েন্ট আসুকনা কেন, মাস্কই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী সুরক্ষা অস্ত্র।
দয়া করে মাস্ক পরুন।
ওমিক্রন যত দুর্বল হোকনা কেন, বয়স্ক মানুষ, যাদের কোমর্বিডিটি আছে তাদের জন্য এটি ভয়ংকর হতে পারে। মনে রাখবেন, Little birds may peck a dead lion.
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন
ডাঃ নুসরাত সুলতানা
সহযোগী অধ্যাপক (সিসি)
ভাইরোলজী বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ।