আন্তর্জাতিক ডেস্ক। সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য পরিবর্তিত ধরনসমূহের চেয়ে ওমিক্রন কম প্রাণঘাতী। যারা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন- এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি তাদের নেই। এই বৈজ্ঞানিক সত্যতা ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণায় আরো জানা যায়, করোনা টিকার কোনো ডোজ নেননি- এমন লোকজন ওমিক্রনে আক্রান্ত হলেও তাদের গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
কিন্তু যারা করোনা টিকার ডোজ এখনও নেননি তাদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন নামের এই ভাইরাসটি কতখানি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে- সে বিষয়ে জানতে এই প্রথম বড় আকারের গবেষণা হলো বিশ্বের কোনো দেশে।
দক্ষিণ আফ্রিাকার সংক্রামক রোগ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কমিউনিকেবল ডিজিজেস (এনআইসিডি) সম্প্রতি দেশটিতে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনে আক্রান্ত ১১ হাজার ৬০০ রোগীর তথ্য ও নমুনা পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এই রোগীদের মধ্যে ৫ হাজার ১০০ জন ছিলেন ওমিক্রনে আক্রান্ত। অবশ্য এখন পর্যন্ত এই গবেষণাটির পিআর রিভিয়্যু হয়নি।
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়। তার পর থেকে অকল্পনীয়ভাবে দ্রুতগতিতে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এই ভাইরাসটি।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক জীবাণু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা ৭০ গুণ বেশি। বর্তমানে করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পেয়েছে এই ভাইরাসটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘উদ্বেগজনক ধরনের’ তালিকায় স্থান পাওয়া ওমিক্রনের সংক্রমণ পৃথিবীজুড়েই বাড়ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন লক্ষাধিক রোগী করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন।
তবে প্রতিদিন যত সংখ্যক ব্যাক্তি এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই হিসেবে আক্রান্তের পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশ কম।
আন্তর্জাতিক জীবাণু বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, অতি উচ্চ মাত্রার সংক্রামক ভাইরাস হলেও করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টাসহ অন্যান্য রূপান্তরিত ধরন এবং মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় কম প্রাণঘাতী।
‘ডেল্টায় আক্রান্ত হলে যে পরিমাণ গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুঝুঁকিতে থাকেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে সেই ঝুঁকি অন্তত ২৫ শতাংশ কম থাকে,’- বলা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষণা প্রতিবেদনে।
সূত্র: রয়টার্স
সময় জার্নাল/আরইউ