বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

পিঠা বিক্রি করে সংসারের চাকা ঘোরাচ্ছেন যারা

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২০, ২০২২
পিঠা বিক্রি করে সংসারের চাকা ঘোরাচ্ছেন যারা

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জ জেলার জাবেদ(৩৩),বাবা মারা গেছে প্রায় এক যুগ আগে। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের বড় ছেলে হিসেবে বেকায়দায় পড়েন। অভাব-অনটনে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ে তার। অবশেষে লক্ষ্মীপুর জেলায় এসে সদরের ব্যস্ততম মোড় উত্তর স্টেশনে দিনের বেলায় শরবত ও রাতে শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। প্রায় ১১ বছর ধরে শীতের পিঠা বিক্রি করে চলছে তার সংসার। সাথে আছে তার আপন ২ভাই। তারা স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকছেন কালি বাজার রোডে।

শুধু জাবেদ নয়, লক্ষ্মীপুরে তার মতো শতাধিক পুরুষ ও নারী সংসার চলছে শীতের পিঠা বিক্রি করে। শীতকালে শীতের কুয়াশা ভেজা সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা আর পুলির আয়োজন বহুকাল আগে থেকেই করা হয় ঐতিহ্যগতভাবেই। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছে থাকলেও এখন অনেকেই ঘরে ঘরে শীতের পিঠা বানিয়ে খেতে পারে না। বাড়িতে পিঠা বানানোর ঝামেলা এড়াতে অনেকেই পিঠার দোকান থেকে পিঠা ক্রয় করে স্বাদ মিটাচ্ছে। তাই লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে জমে ওঠে বাহারি শীতের পিঠার দোকান। সন্ধ্যার পর থেকে এক প্রকার সিরিয়াল দিয়ে কিনতে হয় পিঠা।

রাস্তার দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে অনেককেই দেখা যায় পিঠা খেতে। আর শীতের পিঠা খাওয়ার তৃপ্তি মেটাতে গিয়ে লক্ষ্মীপুরের শতাধিক পুরুষ ও নারীর উপার্জন হচ্ছে এখান থেকেই। যা দিয়ে চলছে তাদের সংসার, যা তাদের জীবনযাপনে সাহায্য করছে।

শুধু যে সাধারণ মানুষই এই পিঠা খেয়ে থাকেন তা নয়। লক্ষ্মীপুরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তার ধারের পিঠার দোকানের ওপর নিভর্রশীল হয়ে উঠছে দিন দিন। লক্ষ্মীপুরের ভাপা পিঠা, পাটিশাপটা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা বিক্রি হয়। চিতই পিঠার সঙ্গে সরিষার ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচের ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তাসহ ১৬ প্রকার ভর্তা দেওয়া হয়।

ডিম দিয়েও বানানো হয় চিতই পিঠা। ভাপা পিঠা ৫-১০ টাকা, ডিমচিতই ১৫ টাকা, তেলের পিঠা ৫ টাকা, পাটিশাপটা ১০ টাকায় বিক্রি হয়। ১১ বছর ধরে লক্ষ্মীপুরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার পিঠা বিক্রি করা জাবেদ জানান, খেজুর গুড় ও চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি ভাপা আর চালের গুঁড়া পানি দিয়ে বানানো হয় চিতই পিঠা। শীতের পিঠা হলেও বছরের প্রায় সব সময়ই তিনি পিঠা বিক্রি করেন। বাবার মৃত্যুর পর পিঠা বিক্রি করেই চলছে তার সংসার।

পিঠা বিক্রির টাকা দিয়ে তার মেয়েকে সে স্কুলে পড়াচ্ছে। ২৫ বছর ধরে শীতের পিঠা বিক্রি করা এক নারী সুরাইয়া বেগম (৪৫) জানান, শীত বেশি পড়লে পিঠা বিক্রি বাড়বে। প্রতিদিন গড়ে ৩ শতাধিক পিঠা বিক্রি করেন তিনি। চালের গুঁড়া, গুড়, লাকড়ি ও অন্যান্য খরচ বাদে ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয় দিনে। মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হলেও তুলনামূলক সন্ধ্যায় দোকানে পিঠার চাহিদা বেশি থাকে। সন্ধ্যার সময় পিঠা কিনতে দোকানে সিরিয়াল দেন ক্রেতারা।

তা ছাড়াও অনেকে বেশি পিঠা প্রয়োজন হলে ২/১ দিন আগে অগ্রিম টাকা দিয়ে অর্ডার দিয়ে যান। জাবেদ আবীর আকাশ জার্নালকে জানান দিনে তারা ৩ ভাই মিলে নয়দশ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন উত্তর স্টেশনে। অনেকে ভর্তা খাওয়ার লোভেও আসে বলে জানান এ পিঠা বিক্রেতা।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল