বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

শেখ ফাহমিদা নাজনীন এর কবিতা ‘অজুহাত’

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২০, ২০২২
শেখ ফাহমিদা নাজনীন এর কবিতা ‘অজুহাত’

            অজুহাত 
                        - শেখ ফাহমিদা নাজনীন 

আজকে রাতেই শেষ বিরিয়ানি, কাল থেকে হবে ডায়েট, 
আজকে না হয় নাক ডুবে খাই, কাল সকালেই ফাইট।

শেষ খাওয়া ভেবে রাত্তিরে পাতে দই-মিষ্টিও থাকে, 
আরও যা যা আছে মনপছন্দ, মন যা খায়েশ রাখে।

ভরপেট খেয়ে রাতভর ঘুম, সকালে উঠতে দেরি, 
অলসতা এসে দেহ জুড়ে থাকে, মন হয়ে থাকে ভারি।

আজকে থেকেই ডায়েটের কথা, থাক, কাল ঠিক রবে,
আজকে কেমন গা ম্যাজ ম্যাজ, মনে হয় জ্বর হবে। 

এইবেলা দুটো ভাত খেয়ে নেই, খাসির কলিজা দিয়ে, 
জ্বর আসছে তো, না খেলে শরীর শক্তি পাবে কি নিয়ে? 

নামাজ পড়া তো? পাঁচটি ওয়াক্ত? পড়বো এমাস গেলে, 
পঁচিশ তারিখ, পাঁচটা দিন তো? কেটে যাবে হেসে খেলে। 

আসছে মাসের প্রথম থেকেই পাক্কা ঈমানদার, 
দেখে নিও তুমি, আযানের সাথে মন বাঁধা আছে কার?

এতদিন যদি এমনই কাটলো, আর ক'টা দিন থাক,
এই ক'টা দিনে পাপপুণ্যের কি এমনই বা ফারাক? 

পরের মাসের প্রথম দিনে ভোরের আযান আসে, 
পাক্কা নামাজী ঘুমে বিহ্বল সুখ স্বপ্নের গ্রাসে। 

রোদ চড়ে গেলে আড়মোড়া ভেঙে, হাই তুলে, বসে ভাবি, 
ফজর যখন কাযাই হয়েছে, আজ বাদ থাক সবই।

কাল শুরু হবে নতুন জীবন, আসুক ভোরের লগ্ন, 
রোজ ভোর আসে, সূর্যও হাসে, দুচোখ নিদ্রামগ্ন। 

কি বলছো তুমি! দিব্যি করেছি? আজই করে দেবো কাজটা? 
তা কি করে হবে? দেখছো না তুমি বেলা গড়িয়েছে পাঁচটা? 

করবোনা তা কি বলেছি কখনও? করবো যতটা পারি, 
তবে আজকেই করতেই হবে, এ কেমন ঝকমারি? 

টাকা-পয়সার লেনদেন ছিলো, আগেই নিয়েছি হয়তো, 
তাই বলে আজই করে দিতে হবে, এমন সাধ্য নয় তো।

আমি ভাই ভারি ছা-পোষা মানুষ, হাজারটা কাজে ব্যাস্ত,
তার ওপরে যদি তোমার কাজও আমাকেই করো ন্যাস্ত,

কি করে করবো? একটু তো ভাবো, একটু তো মেনে নাও,
কথাটা যখন দিয়েই ফেলেছি, আচ্ছা করবো তাও।

তবে বলি কিনা, আজকে হবেনা, ঘরে ফিরবার তাড়া,
কালকেই দেখো, ডাকতে হবেনা, আপনিই দেবো সাড়া।

তারপর তোমার ঐটুকু কাজ, পলকেই করে নেবো, 
আজকে আমার ভারি অসুবিধা, কাল তবে দেখা দেবো।

জানো নাকি আমি সুগারের রোগী,  ঘনঘন খেতে হয়, 
তিরিশটা দিন একটানা রোজা, আমার জন্য নয়।

ওসব তোমরা টগবগে যারা, তোমাদের কাছে সোজা,
বয়স হয়েছে, গায়ে বল নেই, কি করে রাখবো রোজা?

কি বললে তুমি? উঠতি বয়স? সামনে অনেকদিন? 
নামাজ-রোজা, পর্দাপুশিদা আরও যা যা আছে ঋণ,

সব কিছু হবে, বয়স যখন খানিকটা হবে গত?
আচ্ছা বাপু তাই হোক, তবে চলো তুমি মন মতো। 

আজ বলি শোন, এ জীবন কোনো ফালতু বিষয় নয় তো, 
এ জীবন সে তো বিশ্বপ্রভুর পাঠানো হিসাবি তত্ত্ব।

প্রতিটা সময় প্রভু দেখে নেয়, কি করে করছো পার?
জীবনটা কি হলো উপঢৌকন? নাকি ব্যার্থ আকর?

অথচ আমরা কতো কথা বলি, কতো কাজ রাখি বাকি,
অজুহাতে ভোলে মনুষ্যজাতি, প্রভুকে কি দিয়ে ঢাকি?

শেখ ফাহমিদা নাজনীন 
১১ জানুয়ারি ২০২২।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল