শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত। লালমনিরহাট: জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বীর নিবাস ভাংচুর ও মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে এ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম দুলালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বাদি হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামে উক্ত বীর নিবাস ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। আজিজুল ইসলাম দুলাল উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের পূর্ব সিন্দুর্না এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ বছর পূর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের নামে ১৫ শতাংশ খাস জমি ও বীর নিবাস প্রকল্পের একটি গৃহ বরাদ্দ দেয় সরকার। উক্ত ঘরের কাজ শুরু করলে আজিজুল ইসলাম দুলাল উক্ত ১৫ শতাংশ জমি নিজের দাবি করে আদালতে একটি অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে উক্ত জমিতে গৃহ নির্মানের উপর স্থগীতাদেশ দেয় আদালত। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর গত ১৪ জানুয়ারি স্থগীতাদেশ তুলে নিয়ে আবারও কাজ শুরু করা নির্দেশ দেয় আদালত। এমতাবস্থায় আদালতের নির্দেশে পুনরায় কাজ শুরু করলে আজিজুল ইসলাম দুলালসহ আরও ১০-১২ জন বৃহস্পতিবার রাতে উক্ত বীর নিবাস ভাংচুর করে এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক জানান, সরকার আমার নামে ১৫ শতাংশ খাস জমি ও বীর নিবাস বরাদ্দ দেয়। কিন্তু এই ১৫ শতাংশ জমি আজিজুল হক দুলাল নিজের দাবি করে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করে। যার প্রেক্ষিতে আদালত স্থাপনা নির্মানে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে আমরা কাজ বন্ধ রাখি। পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে সকল নথিপত্র আদালতে পেশ করা হলে গত ১৪ জানুয়ারি আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করার নির্দেশ দিলে আমরা কাজ শুরু করি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আজিজুল হক দুলালসহ প্রায় ১০-১২ জন ওই জমিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে উক্ত নির্মানাধিন বীর নিবাস ভাংচুর করে। আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিসহ আমাকে হত্যার হুমকী দেয়। এবং সে বলে যে মুক্তিযোদ্ধারা নাকি দেশটাকে ধ্বংস করছে। সে একজন এ্যাডভোকেট হয়ে এসব কথা কিভাবে বলতে পারে। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে আজিজুল ইসলাম দুলাল বীর নিবাস ভাংচুর ও মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার হুমকির ঘটনাটি অস্বীকার করে জানায়, উক্ত জমিটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। ৬২ সালের রেকর্ডে আমার দাদার নামে ছিল। পরবর্তীতে ৯০ সালের রেকর্ডে উক্ত জমিটি খাস খতিয়ান ভুক্ত হয়ে যায়। তাই জমিটি আমার দাবি করে আমি আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এবং উক্ত জমির উপর কোন প্রকার স্থাপনা নির্মানে নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। যেহেতু আদালতে মামলাটি চলমান আছে তাই আমি শুধুমাত্র ঘরের কাজে বাঁধা দিয়েছি। আমি কোন রকম ভাংচুর বা কাউকে কোন প্রকার হুমকি প্রদান করি নাই। এগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন জানান, শুনেছি আজিজুল ইসলাম দুলাল বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ও মুক্তিযোদ্ধাকে নানাভাবে হয়রানীর চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগও হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময় জার্নাল/আরইউ