সময় জার্নাল ডেস্ক: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ সালের বর্তমান ওড়িশা রাজ্যের কটক শহরে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন। সুভাষ বোসের বাবা ছিলেন কটক প্রবাসী বাঙালি আইনজীবী জানকীনাথ বসু। মা প্রভাবতী দেবী। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ৯ম ।
১৯১১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯১৮ সালে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে সাম্মানিক সহ বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজউইলিয়াম হলে উচ্চশিক্ষার্থে ভর্তি হন। তারপর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়েও বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন। প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া।’
এইভাবে তিনি সব ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি দেশপ্রেমিক সত্ত্বার জন্য পরিচিত ছিলেন। তাই ধীরে ধীরে সাধারণ সুভাষচন্দ্র বসু থেকে অসাধারণ মানুষ- নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত হতে লাগলেন। বলা হয়ে থাকে তিনি ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক কিংবদন্তি নেতা। তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল স্বামী বিবেকানন্দের ভাবাদর্শ।
প্রায় বিশ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে মোট ১১ বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। এই সময় তাকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ১৯৩০ সালে তাকে নির্বাসিত করা হয় ইউরোপে। এর মধ্যে ৪ জুলাই ১৯৪৪ সালে বার্মাতে এক র্যালিতে তিনি বলেন, "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব" তার বিখ্যাত উক্তি "ভারতের জয় ("জয় হিন্দ "), পরবর্তীতে ভারত সরকার গ্রহণ করে নেয় ।
সর্বোপরি নেতাজীর ত্যাগ, প্রজ্ঞা ও আপোষহীন রণনীতি তাকে ভারতব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। ভারত স্বাধীন হবার পর কলকাতার একাধিক রাস্তা তার নামে নামাঙ্কিত হয় । বর্তমানে কলকাতার ইন্ডোর স্টেডিয়াম নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তার নামে করা হয়েছে । নেতাজির জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে দমদম বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তিত করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হয় । কলকাতায় স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং দিল্লিতে স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ।
উল্লেখ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুভাষচন্দ্রকে 'দেশনায়ক' আখ্যা দিয়ে তাসের দেশ নৃত্যনাট্যটি তাকে উৎসর্গ করেন। উৎসর্গপত্রে লেখেন" স্বদেশের চিত্তে নূতন প্রাণ সঞ্চার করবার পূণ্যব্রত তুমি গ্রহণ করেছ, সেই কথা স্মরণ করে তোমার নামে ‘তাসের দেশ’ নাটিকা উৎসর্গ করলুম ।
এমআই