শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অনুমোদনহীন হেলথ এন্ড মেডিকেয়ার নামে একটি ক্লিনিকে এমবিবিএস চিকিৎসক দিয়ে চলছে অপারেশন। রোববার ভোর রাতে একটি অপারেশন করতে গিয়ে তার হাতে এক নবজাতকের মৃত্যুও হয়েছে।
হেলথ এন্ড মেডিকেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি আধাপাকা। ক্লিনিকটি উপরের অংশ টিনশেড দিয়ে তৈরী করা। বিশেজ্ঞরা বলছেন, কোনভাবেই টিনশেড ঘর হতে পারে না। তবে অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে স্বাস্থ্য বিভাগের নেই কোনো কার্যক্রম।
জানা গেছে, ওই ক্লিনিকে রোববার ভোর রাতে সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী গ্রামের এক গর্ভবতী নারীর সিজারের সময় তার নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনাটি নিয়ে ওই সময় নবজাতকের পরিবার অভিযোগ তুললে রাতেই স্থানীয় এক রাজনৈতিক দলের নেতার হস্তক্ষেপে মিমাংশাও হয়। অপারেশনটি করেন ওই ক্লিনিকের আবাসিক সার্জন দাবীদার ডাঃ রাজিবুল হাসান।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ডাঃ রাজিবুল হাসান তার চিকিৎসা পত্রে নিজেকে এমবিবিএস (রাজ), সি-আল্টা ও পিজিটি-সার্জারী দাবী করলেও তার বিএমডিসি রেজি নং খুঁজে দেখা যায় ভিন্ন তথ্য। তিনি একজন এমবিবিএস চিকিৎসক মাত্র। তার বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার বড় সারালপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আফজাল হোসেন।
আরও জানা গেছে, সিজারের মত অপারেশন করতে গেলে চিকিৎসককে অবশ্যই গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন হতে হবে। এ ছাড়া একটি সিজার অপারেশনে একজন গাইনী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন, একজন অবস বিশেষজ্ঞসহ একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকবে অপারেশন থিয়েটারে। সেটির কোনো কিছুই মানা হয় না এ ক্লিনিকে। ওই ক্লিনিকে শুধু ডা: রাজিবুল হাসান নামে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক ও কয়েকজন নার্স অপারেশন থিয়েটারে সব কিছু করেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোববার ভোর রাতে সিজারের সময় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই নবজাতকের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে ওই ক্লিনিকে প্রায় ১ ঘন্টা বসে থেকেও ডা: রাজিবুল হাসানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি জরুরী অপারেশনে আছে এ অযুহাতে কেটে পরেন। পরে তার ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভড করেন নাই।
হেলথ এন্ড মেডিকেয়ার’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, সব কিছু মেনে আমরা ক্লিনিক পরিচালনা করছি। তবে তার কাছে ক্লিনিকের অনুমোদেন পত্র দেখতে চাই তিনি তা দেখাতে পারে নাই।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা: নির্মলেন্দু রায় জানান, হেল্থ এন্ড মেডিকেয়ার নামে কোনো ক্লিনিকের অনুমোদন নেই। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর