নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিপিএলে আজ (মঙ্গলবার) বরিশাল মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। এ ম্যাচে কুমিল্লার অফ স্পিনার নাহিদুল ইসলামের বোলিং বিষে পেরে ওঠেনি বরিশাল। হেরেছে ৬৩ রানে।
এদিন আগে ব্যাট করে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। সে লক্ষ্য টপকাতে নেমে অলআউট হওয়ার আগে স্কোর বোর্ডে মাত্র ৯৫ রান তুলতে পারে বরিশাল। এতে ৬৩ রানের জয় পায় কুমিল্লা। এবারের টুর্নামেন্টে এটি কুমিল্লার দ্বিতীয় জয়। এই জয়ের নায়ক অফ স্পিনার নাহিদুল। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১ মেইডের সাহায্যে মাত্র ৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। একে একে ফেরান সৈকত আলি, সাকিব এবং গেইলকে।
কুমিল্লাকে জবাব দিতে নেমে শুরুতেই পথ হারিয়ে বসে বরিশাল। ইনিংসের প্রথম ওভারে কোন রান না দিয়ে সৈকতের উইকেট তুলে নেন নাহিদুল। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে শিকার বানান সাকিবকে। তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ইমরুলের হাতে ধরা পড়েন সাকিব, ফেরেন ৪ বলে ১ রান করে। নাজমুল হোসেন শান্ত এবার তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। লাভ হয়নি, হৃদয় ১৯ রান করে আউট হলে ভাঙে ২৭ রানের জুটি।
ওপেনার শান্ত একপ্রান্ত আগলে রেখে খেললেও অপর প্রান্তে যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন বাকিরা। গেইল ৭ রান করে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়লে দলীয় স্কোর পঞ্চশ রান ছুঁতেই ৪ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বরিশাল। টেস্ট মেজাজের ব্যাটিংয়ে দলের চাপ বাড়াতে থাকেন শান্ত। সেই চাপ কমাতে দ্রুত গতিতে রান তুলতে গিয়ে খেই হারান নুরুল হাসান সোহান। ১৪ বলে ১৭ রানে আউট হন তানভীরের বলে।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে জোড়া ঘাতে ব্রাভো আর জিয়াউরের উইকেট তুলে নেন শহিদুল। এই দুই ব্যাটসম্যান রানের খাতা খুলতে পারেননি। জ্যাকব লিনটট থামেন ৮ রানে। তাকে বাউন্ডারি লাইনে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ফেরান ফাফ ডু প্লেসি। তবে অন্যপ্রান্ত আকড়ে ধরে রাখে শান্ত। তবুও বাঁচাতে পারেননি দলের হার। নাইম কোন রান না করে আউট হওয়ার পর ইনিংসের ১৮তম ওভারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘজরে শান্ত।
মুস্তাফিজের বলে ৩৬ রান করে শান্ত আউট হলে ৯৫ রানে গুঁটিয়ে যায় বরিশাল। ৪৭ বলের ইনিংসটি এই বাঁহাতি সাজান ২টি চারের মারে। শান্তর আউট হলে দলের হার নিশ্চিত হয় বরিশালের। ৬৩ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলে এটি ২ ম্যাচে টানা দ্বিতীয় জয় কুমিল্লার।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। ক্যামেরন ডেলপোর্টের সাথে ইনিংস শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয়। দুই ব্যাটসম্যান ঝড় তোলেন নিজ ব্যাটে। প্রথম ৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ২৯ রান। চতুর্থ ওভারে খানিক ছন্দপতন। ডেলপোর্টের লাগাম টেনে ধরেন নাঈম হাসান। ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে বলের লাইন হারিয়ে স্টাম্পিং হন ডেলপোর্ট। ১৩ বলে ১৯ রান করেন তিনি।
কুমিল্লার বড় তারকা ফাফ ডু প্লেসি আজও সাফল্যের দেখা পাননি। ১১ বলে ৬ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস এসে জয়ের সাথে ২৪ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন। ডোয়াইন ব্রাভোর বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১১ বলে ১৫ রান করেন। ৭১ রানে ৩ উইকেট হারানো কুমিল্লার হাল ধরেন জয় আর মুমিনুল হক। চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪৪ রান।
এই জুটি ভাঙেন জ্যাকব লিনটট। শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে ক্রিস গেইলের তালুবন্দী হন জয়। সমাপ্তি ঘটে জয়ের ৩৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংসের। মুমিনুল ২৩ বলে ১৭ রান করে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৫ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন। শেষ দিকে করিম জানাত ১টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১৬ বলে ২৯ রান করেন। এতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান সংগ্রহ করেছে কুমিল্লা। বরিশালের পক্ষে ব্রাভো ৩ এবং সাকিব ২ উইকেট নেন।
সময় জার্নাল/এমআই