সময় জার্নাল রিপোর্ট : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ জনসমাগম নিষিদ্ধসহ ২২ দফা প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার (২৮ মার্চ) প্রস্তাবটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারের অনুমোদন পেলে প্রস্তাবটি জারি হতে পারে। এ নির্দেশনাগুলো কমপক্ষে তিন সপ্তাহ পালনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সারা দেশে ফের করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দুটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। একটি সারা দেশের জন্য, অপরটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রযোজ্য হবে। প্রথম প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে
১. সব ধরনের সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য জনসমাগম নিষিদ্ধ করা। কমিউনিটি বা কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে, জন্মদিন, সভা ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।
২. বাড়িতে বিয়ে ও জন্মদিন অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা।
৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা। তার আলোকে ওয়াক্তিয়া নামাজে পাঁচ অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০ জনের অধিক নয়।
৪. পর্যটন, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, থিয়েটার হলসহ সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।
৫. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এছাড়া ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন না করা।
৬. উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আন্তঃজেলা যান চলাচল বন্ধ রাখা। অভ্যন্তরীণ বিমানে ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের অধিক যাত্রী পরিবহন না করা।
৭. আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচল (স্থল/বিমান/সমুদ্র) সীমিত করা। এছাড়া বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা।
৮. নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জরুরি দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয় খোলা ও উন্মুক্ত স্থানে নিশ্চিত করা। ওষুধের দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিশ্চিত করা।
৯. শপিংমল বন্ধ রাখা।
১০. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন- মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা।
১১. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সব সময় নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা।
১২. টিকা কার্যক্রম স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা।
১৩. বাড়ির বাইরে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরি, জনসমাগম, আড্ডা বন্ধ করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৮টার পর বাইরে বের হওয়া নিষেধ করা।
১৪. হোটেল- রেস্তোরাঁয় খাওয়া বন্ধ রাখা। তবে খাবার কিনে বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে।
১৫. বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সর্বদা নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা। মাস্ক না পরলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।
১৬. করোনা উপসর্গ ও লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা।
১৭. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি অফিস, শিল্পকারখানা বন্ধ রাখা। জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিদিন ৩৩ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দ্বারা কর্মসম্পাদন করা। এছাড়া অসুস্থ, গর্ভবতী ও ৫৫ বছরের ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা, কর্মচারীর বাড়িতে থেকে অফিস নিশ্চিত করা।
১৮. অফিসে প্রবেশ ও অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা।
১৯. প্রতিষ্ঠানগুলোর সভা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার অনলাইনে করা।
২০. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন পরীক্ষা স্থগিত রাখা।
২১. প্রয়োজনে সংক্রমিত এলাকায় লকডাউন করা।
২২. প্রত্যেক এলাকার বর্জ্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঢাকনাযুক্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করা এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানান্তর নিশ্চিত করা।
সময় জার্নাল/আরইউ