বিনোদন ডেস্ক | ভারতীয় বাংলা গানের কালজয়ী গায়িকা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। খবর: আনন্দবাজার পত্রিকা, সংবাদপ্রতিদিন।
গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল তার। গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ছিলেন এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী।
বেশ কিছুদিন ধরে বয়সজনিত অসুস্থায় ভুগছিলেন প্রবীণ এই সংগীতশিল্পী। পড়েও গিয়েছিলেন বাড়িতে। হাঁটুর হাড় ভেঙে গিয়েছিল তার। এরপরই শিল্পীকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসায় দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে।
পরে করোনামুক্ত হলেও শিল্পীর শারীরিক অবস্থা যে রকম ছিল তাতে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল না। কয়েকদিন আগে তার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় রেল কর্মকর্তা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও হেমপ্রভা দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি ছয় ভাইবোনে মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ পান ভারতীয় এই সংগীতশিল্পী ও বাংলা সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ। ১৯৭০ সালে জয়জয়ন্তী ও নিশিপদ্ম চলচ্চিত্রে তার গানের জন্য সেরা নেপথ্য গায়িকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলা ছায়াছবির গান, বেসিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা উচ্চাঙ্গ সংগীতেও বিশেষ নৈপুণ্যের পরিচয় রেখেছিলেন। চলতি বছর পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখান করেন কিংবদন্তি এই শিল্পী।
লতা মঙ্গেশকরকে হারানোর শোক না কাটতেই আরও এক নক্ষত্রের পতনে ভারতীয় সংগীতাঙ্গন তথা শোবিজে নেমে চলছে শোকের মাতম। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে তিনি তার অবিস্মরণীয় কণ্ঠমাধুর্যের জাদুতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তার গাওয়া অসংখ্য গান সংগীতপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় আজও শীর্ষে। তার মৃত্যুতে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। স্বর্ণকণ্ঠী গীতশ্রী সন্ধ্যাদির সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের হৃদ্য সম্পর্ক ছিল। তার মৃত্যুতে আমি আমার অগ্রজাকে হারালাম। আমি সন্ধ্যাদির পরিবার-পরিজন ও অসংখ্য অনুরাগীকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
সময় জার্নাল/আরইউ