আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ইউক্রেনকে দেওয়া মস্কোর শর্তসমূহ পূরণ না হলে অভিযান যে থামছে না সেটা রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তব্যে পরিস্কার। কিয়েভ থেকেও শর্ত মেনে নেওয়ার কোনো বার্তা আসেনি। এমন অবস্থায় রাজধানী কিয়েভ দখল করতে পূর্ণমাত্রায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় সতর্ক করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানান, কিয়েভ শহরে হামলা চালানোর জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম একত্রিত করছে রুশ বাহিনী। ট্যাঙ্ক ও মোটরচালিত পদাতিক ইউনিটগুলো নিকটবর্তী শহর ইরপিনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া কিয়েভের উত্তরপশ্চিম দিকের ৩টি শহর (বুচা, হোস্টোমেল ও ইরপিন) অব্যাহত রুশ বোমাবর্ষণ চলছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ অভিযান ঠেকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
পুতিনের দেওয়া শর্তগুলো হলো- একটি নিরপেক্ষ ও পরমাণু অস্ত্রমুক্ত দেশ হিসেবে ইউক্রেনের অবস্থান স্পষ্ট করা, দেশটি থেকে নাৎসীবাদ নির্মূল, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
এদিকে চলমান এই সংকট নিরসনে সোমবার (৭ মার্চ) তৃতীয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে দুই দেশ। তবে এবারের বৈঠকটি কোথায় হচ্ছে সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সামরিক অভিযান ঘোষণার কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ সেনারা। এরপর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির দুই হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং রাশিয়ার ১১ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, যুদ্ধে তাদের ৪৯৮ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের ২ হাজার ৮৭০ জনের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ হামলায় এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ৩৬৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যদিও সংস্থাটি বলেছে, এটি নিশ্চিত যে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা হয়তো অনেক বেশি।
সূত্র : বিবিসি
সময় জার্নাল/ইএইচ