মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চিকিৎসকদের জন্য আবার শুভেচ্ছা বার্তা?

বুধবার, মার্চ ৩১, ২০২১
চিকিৎসকদের জন্য আবার শুভেচ্ছা বার্তা?

ডাঃ আহমেদ জোবায়ের :

গতকাল ছিলো ডক্টর'স ডে।

মানে কসাইদের জন্য একটা দিন।

আপনারা যেমন ভ্যালেন্টাইন্স ডে,কিস ডে,হাগ ডে, রোজ ডে,  মাদার'স ডে, বাবু খাইছো ডে পালন করেন তেমন একটা দিন।

ভাবছিলাম এই ১১ বছর এর চিকিৎসা জীবনে কত মানুষকে চিকিৎসা দিলাম অনলাইন অফলাইনে কত মানুষকে কত হেল্প করলাম,পরামর্শ দিলাম, উপকার করলাম এবং চেষ্টা করলাম এবং একদম বিনা ভিজিটে,, নিশ্চয়ই সবাই ডক্টর'স ডে তে শুভেচ্ছা জানিয়ে ইনবক্স,ফেসবুক ল ওয়াল ও মোবাইলের ম্যাসেজ বক্স ভরিয়ে দিবেন।

দুই একজন হয়তো গোলাপ নিয়ে চেম্বারেও চলে আসবেন।

কিছু লিখলে সেখানে কমেন্টে এসেও অনেকে বলতেন ডাক্তার ইনবক্স চেক করুন প্লিজ।

ইনবক্স চেক না করায়,স্পাম টেক্সট দেখতে দেরী হওয়াও অনেকে বিরক্তও হতেন।

কিন্ত হায় ললাটের কি লিখুন।

একজন বন্ধু যার মামা একজন বড় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তিনি  ছাড়া আমাকে তো কেউ শুভেচ্ছা জানায়নি।

অন্য ডাক্তাররাও যে শুভেচ্ছা পেয়েছেন তা নজরে পড়েনি।

ডাঃ Gulzar Hossain Ujjal  ভাই হতাশামূলক পোস্ট লিখেছিলেন।

সাধারণ মানুষের কোন শুভেচ্ছা বার্তাও চোখে পড়েনি।

শুধু Anjum Ruhi  আপু একটা পোস্ট লিখেছিলেন।

কোভিড প্যান্ডেমিক তো এখনও শেষ হয়নি।

সাম্প্রতিক চিত্র তো খুবই ভয়াবহ।

কত ডাক্তার মারা গেলেন।

কতজন আক্রান্ত হলেন তার হিসেব কে রাখে।

এই কোভিডে ডাক্তারদের সাথে কি কি আচরণ হয়েছে সবই মনে আছে।

মানুষ ডাক্তারদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলো।

ডাক্তারের কোয়ার্টারে ইট পাটকেল ও মেরেছিলো।

ডিউটির পর হোটেলে ডাক্তারদের কোয়ারেন্টাইনের একাকীত্বের দিনগুলো কি খুব সুখের ছিলো?

ছোট্ট বাচ্চাকে মা কোলে তুলে নিতে পারেননি।

পাশের রুমে বন্ধি ছিলেন, বাচ্চার কান্নায় মাও কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন।

দূর থেকে ডাক্তার বাবা সন্তানদের দেখে আবার চলে গেছেন কাজে।

বাসায় ঢুকতে পারেননি।

কত নিদারুণ সব গল্প।কত শোকগাথা। 

কত হৃদয় বিদীর্ণ করা সব মুহুর্ত। কত হাহাকার বুকে চাপায়ে এই দেশের চিকিৎসকরা কাজ করেছেন এই প্যান্ডেমিকে।

প্যান্ডেমিকে কোন চিকিৎসক কোন প্রনোদনাও পাননি।

আপনারা দেখলাম তাদেরকে ফ্রন্টিয়ার, ফ্রন্টলাইনার, যোদ্ধা,শহীদ গাজী কত কি উপমায় ডেকেছিলেন সেইসব দিনগুলোতে।

আমার বন্ধু লিস্টে ৩ হাজারের বেশিই চিকিৎসক। 

কারো ওয়ালে ডাক্তারের জন্য একটা দিনে কাউকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখলাম না।

শুধু ডাক্তাররা নিজেরা নিজেদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দেশের মিডিয়া পাড়ায় ও তেমন আওয়াজ দেখা যায়নি।

অথচ সাংবাদিকরা শুধু চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ সেজে ভুল ধরে অভিযোগ করেই গেলেন।

বুঝলাম এই দেশের সবাই খুব ভালো।

পেশাজীবি হিসেবে চিকিৎসকরা খুব খারাপ।

এরা কসাই সব।

এদের জন্য আবার শুভেচ্ছা বার্তা কি।

হ্লাদের শুধু মাইরের উপর, চড় থাপ্পড় এর উপর রাখতে হবে।

আমি সারাদিন রাত ভেবেছি,দেখলাম এই দেশের মানুষ আসলেই তার চিকিৎসক সন্তানদের দেখতে পারেনা।

এতটা অপাংক্তেয়ই যখন তখন এখানে থাকার কি খুব দরকার।

যাদের সুযোগ আছে,পিছুটান কম তাদের উচিত এই দেশ ত্যাগ করে বিদেশে পাড়ি জমানো।

ভবিষ্যৎ যে আরো ভয়ংকর হবে,সিস্টেমের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে জঞ্জাল জমেছে তা চিকিৎসকরা কোনদিন একা পরিস্কার করতে পারবেন না, মানুষও গালি দেওয়া থামাবেনা।

শুধু ডাক্তার তুই পালিয়ে যা।

এটাই অন্তত জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে একজন সিনিয়র হিসেবে উদাত্ত আহবান থাকবে।

সময় জার্নাল/ইএইচ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল