ডাঃ আহমেদ জোবায়ের :
সম্মানিত সুধীজন।
আপনি টের পাচ্ছেন কিনা জানিনা। তবে দেশে কোভিড ১৯ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
প্রচুর চিকিৎসক আক্রান্ত হচ্ছেন।
হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
মৃত্যুর মিছিল দেখি চারদিকে।
আমার ইনবক্সে মানুষের আহাজারি ও সাহায্য প্রার্থনা।
অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাবেন কিন্ত সীট ও চিকিৎসা পাবেন না।
আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে কিন্ত কোটি টাকা পকেটে থাকার পরেও একটা আইসিইউ বেড পাবেন না।
আমি নিশ্চিত করে বলছি পাবেন না।
আমার কথাটা খেয়াল করবেন।
আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার রুগ্ন দশা গত বছরই উন্মোচিত হয়েছে।
গত বছর পরিস্থিতি কোন রকমে সামাল দেওয়া গেলেও বর্তমান এই সময়ে তা খুব কঠিন হবে।
রাজনৈতিক বক্তব্য লিখে লাভ নেই।
সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করলেও আপনার জীবন চরম হুমকিতে।
আপনি যদি চান আপনার প্রিয় সন্তানরা এতিম হউক, আপনার সন্তানরা মা হারা হউক। তবে যেমন খুশি তেমন চলুন।
আপনি যদি আপনার বৃদ্ধ মা বাবার মৃত্যুর কারণ হয়ে লজ্জিত না হয়ে থাকেন, তবে যেমন ইচ্ছা তেমন চলেন।
আপনি যদি প্রকারান্তরে অন্যের মৃত্যুর জন্য দায়ী হয়েও নিজেকে খুনী না ভাবেন। তবে আপনি যেমন খুশি তেমন চলুন।
আপনি অন্ধ ও বল্গাহীন হলেই প্রলয় থাকবে না।
সামনে ভয়ংকর বিপদ।
মৃত্যুর হাতছানি।
আশা জাগানিয়া কোন ব্যাপার নেই।
চারদিকে শুন্যতা।
আপনাকে বাঁচানোর তেমন উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।
আপনার নিজের জন্য,পরিবার ও সমাজের জন্য দেশের জন্য করণীয় হলো সচেতন হওয়া।
মাস্ক
মাস্ক
মাস্ক
শুধু মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই জীবন ও মৃত্যুর মাঝে, সুস্থতা ও ভোগান্তির মাঝে সীমারেখা টেনে দিতে পারছে এবং পারবে।
একমাত্র কার্যকরী পদক্ষেপ মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
আবার শুরু থেকেই শুরু করতে হবে।
হাত ধুতে হবে। স্যানিটাইজার ইউজ করতে হবে।
মানুষ থেকে পালিয়ে থাকবে হবে
ভীড় এড়াতেই হবে।
বাইরে কারো সামনে হাঁচি কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
অযথা বাইরে ঘুরাঘুরি থামাতেই হবে।
যত বেশি পারা যায় ঘরে, বাসায় থাকতে হবে।
বাইরের আড্ডা, চা দোকানের আড্ডা থামাতে হবে।
মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
শপিং সেন্টারে ঘুরাঘুরি বন্ধ করতে হবে।
বইমেলাতে গিয়ে আড্ডা দেওয়া থামাতে হবে।
যেখানেই একের অধিক মানুষ, সেখান থেকেই দূরে থাকতে হবে।
অফিস আদালত কাজের জায়গায় অত্যন্ত সচেতন হতেই হবে।
রাস্তা ঘাটে মানুষ এর ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে।
নিজেকে ভালবাসলে একটু সচেতন হউন প্লিজ।
গত বছর এই দিনগুলোতে অনেক কথা বলেছি।
পাগলের মত লিখে গেছি।
অনেকে কটু কথা বলেছেন।।
আমরা আতংক ছড়াই বলেছেন।
কিন্ত কষ্ট পাইনি। কারণ অবুঝের উপর কষ্ট পেয়ে লাভ নেই।
যারা ইতিমধ্যে স্বজন হারিয়েছেন,তাদের জিজ্ঞাসা করবেন তাদের অনুভূতি।
যে সন্তান বাবাকে হারিয়েছে, সে জানে কোভিড ১৯ কি কেড়ে নিয়েছে তার।
বাবা হারা তুলতুলে পুতুলের মত মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখুন কি শুন্যতা তার চারপাশ জুড়ে।
ভ্যাক্সিন আপনাকে রক্ষা করতে পারবেনা।
ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনটি মারাত্মক মরণঘাতী।
আপনার সচেতনতা, বিবেকবোধ, দায়িত্বশীল আচরণ ও সতর্কতা-ই আপনার রক্ষাকবচ।
বাকিটা আল্লাহ এর উপর ছেড়ে দিতে হবে।
কিন্ত দেখে শুনে আগুনে ঝাঁপ দেওয়া জড়বুদ্ধির মানুষের কাজ হতে পারে।
একজন শিক্ষিত ও সুবিবেচক মানুষ থেকে তা আশা করা যায়না।
কোন চিকিৎসা নেই।
কোন কার্যকর মেডিসিন নেই।
আপনাদের ইভারমেক্টিন, রেকোনিল,ফ্লাভিপিরাভির,
এজিথ্রোমাইসিন কিছুই মৃত্যুকে আটকে পারবেনা।
আপনার অক্সিজেন লাগবে পাবেন না।।হাইফ্লো অক্সিজেন লাগবে HFNC দিয়ে দিতে হবে পাবেন না।
আইসিউ লাগবে পাবেন না।
হুশে ফিরুন প্রিয় সুধী ও বন্ধুগন।
সচেতন হউন।
জীবনকে ভালোবাসুন।
প্রতিটি জীবন অমূল্য।
সেই অমূল্য জীবন হেলাফেলায় হারাবেন না।
কর জোড়ে অনুরোধ রেখে গেলাম।
প্রলয় শুরু হয়েছে।
ঠেকাতে না পারলে সামনে শুধুই অন্ধকার।।