চলো তবে
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
বেশ তবে একখানা ঝোলা নাও হাতে,
চলো তবে, এইবার বেরিয়ে পড়ি,
ঝোলার মধ্যে থাক কবিতার খাতা,
একমুঠো ছোলা আর ভেজা গুড়মুড়ি।
খিড়কির দ্বার খুলি আলতো হাতে,
যখন আকাশে চাঁদ মাঝরাত্তির।
তাড়াহুড়ো করো নাতো, ধুপধাপ করে,
দেখছোনা, সক্কলে ঘুমে অস্থির?
এক্ষুনি শব্দটা করে ফেলো যদি,
ঘুম ভেঙে তোমাকেই ধরবে সবাই।
কোথায় যাচ্ছো তুমি, এই রাত্তিরে?
জবাবটা দাও দেখি, জবাবটা চাই।
তাই বলি, এইবেলা চুপিসারে উঠে,
চটপট খুলে ফেলো খিড়কির দ্বোর,
তারপর, একছুটে জঙ্গল ভেদে
চলো, আনি রাত ছিঁড়ে আলোর প্রহর।
কতরাত কেটে গেছে নীলচে আলোয়,
নিয়ন বাতির নীচে নিভু নিভু ঘুমে।
জ্যোৎস্নায় ভেসে গেছে চিত্রার পাড়,
কতো হাওয়া ডেকেছিল বুনো মৌসুমে।
অমাবস্যারা ছিলো ঘুটঘুটে ভারি,
নিজেকে যায়না চেনা সে আঁধার ছায়ে।
ঝলসানো বিজলীর সড়কবাতিতে,
রাত্রি লুকিয়ে ছিলো অজপাড়াগাঁয়ে।
আজকে পালাই চলো, রাত্রির কোলে,
তারার চাহনি দেখে চিনে নেবো পথ।
মেঘের বনের মাঝে ঊষার আকাশে,
উঁকি দিয়ে ডাক দেবে স্বর্ণালী রথ।
রোজকার সকালের ধোয়া ওঠা চা,
খবরের কাগজে মুখ ডুবে থাকা,
টেলিভিশনের মাঝে যুদ্ধের গাথা,
জীবন ব্যার্থ যেন, জীবনটা ফাঁকা।
আজ তবে হয়ে যাই, ইবনে বতুতা,
খোদার রাজ্যখানা ঘুরে ফিরে দেখি,
নীলাকাশ, যেইখানে সবুজে মিলায়,
সেইখানে, আলগোছে পা'দুটো রাখি।
কতো পথ পড়ে আছে, কতো সে অচেনা,
এইবেলা, হয়ে যাক চিন-পরিচয়।
ঝর্ণার পাশ ঘেঁষে, ঘাসের ডগায়,
চলো তবে, ঢলে পড়ে প্রাণটা জুড়াই।
পাখির কণ্ঠ কি'বা ঝর্ণার গান,
নদীর আদুল দেহ, ফসলের তান,
প্রাণপেতে শুনি চলো, কৃতজ্ঞতায়,
নিত্য উথলে ওঠে, কার জয়গান?
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
১১ মার্চ ২০২২।ৃ