‘নির্বিচারে মানুষ খুনের বিরুদ্ধে জাগো বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে রোববার
বিকালে শাহবাগে এই কর্মসূচি করতে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার মঞ্চের
নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন।
কিন্তু সমাবেশ করতে না পারার
পর তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “সরকারের আচরণে মনে হচ্ছে, দেশে
একনায়কতান্ত্রিক শাসন চলছে। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়।”
গণজাগরণ
মঞ্চকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে ডিএমপির রমনা জোনের উপ-কমিশনার আজিমুল
হক সাংবাদিকদের বলেন, “প্রতিবাদ সমাবেশের অনুমতি ছিল না। এজন্য তাদেরকে
সমাবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
এরপর ইমরান একই দাবিতে আগামী
৬ জুন বিকাল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘পুলিশের সকল ধরনের
প্রক্রিয়া মেনে’ পুনরায় সমাবেশের ঘোষণা দেন।
‘মাদক উদ্ধারের নামে বিচার বহির্ভূত
হত্যাকণ্ডের’ প্রতিবাদে রোববার বিকালে শাহবাগে সমাবেশ ডেকেছিল গণজাগরণ
মঞ্চ। সেখানে বাধা পাওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন ইমরান এইচ
সরকার। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে আন্দোলন শুরুর পর শাহবাগ ও গণজাগরণ মঞ্চ সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
তবে পরে এই আন্দোলন থেকে সরে যায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো, ইমরানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তোলে তারা।
অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা এই আন্দোলত থেকে খুন-ধর্ষণসহ নানা ঘটনার প্রতিবাদেও সরব হন ইমরান।
এর ধারাবাহিকতায় চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে মৃত্যুর ঘটনাগুলো নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি দেয় গণজাগরণ মঞ্চ।
গত
দুই সপ্তাহে এই অভিযানে শতাধিক মানুষ মারা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ
থেকে এগুলোকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বলা হলেও মানবাধিকারকর্মীরা বলছে, এটা
বিচারবহির্ভূত হত্যা।
ইমরান বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তদন্ত ছাড়াই
শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বিনা বিচারে ভুল মানুষকে হত্যা করা
হচ্ছে।”
মাদকবিরোধী অভিযানের সমর্থন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই
অভিযানে আমাদের সমর্থন আছে। তবে যত বড় অপরাধীই হোক বিচার ছাড়া কোনো মানুষকে
হত্যা করা হোক, এটা চাই না।”
এভাবে অভিযান চালিয়ে মাদক নির্মূল হবে না দাবি করে ইমরান বলেন, “তাই সরকারকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।”
এদিকে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’।
দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।